প্রতীকী ছবি।
করোনা তার আপন গতিতে এগিয়ে চলছে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বাড়ছে আক্রান্ত। তা বলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে তাঁদের চলবে না। কারণ, তাঁরাই যে এই যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সৈনিক। কিন্তু তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। আর এ বার সহকর্মী এবং তাঁর পরিজনদের ভরসা জোগাতে অ্যাপ আনল ডব্লিউবিসিএস (এগ্জিকিউটিভ) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। ওই অ্যাপে রয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এমনকি, আক্রান্ত আধিকারিক বা তাঁদের পরিবারের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সুযোগের ক্ষেত্রেও ‘নিরলস অ্যাপ’ নামের অ্যাপটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মত বিভিন্ন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকের। এই প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বঙ্গে করোনা মোকাবিলায় সামনের সারিতে রয়েছেন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকরা। তা সে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করা বা তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করাই হোক বা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের জন্য পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় নামাই হোক। এর সঙ্গে বাজারে কোথায় ‘কৃত্রিম’ মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে,, তা নজরে রাখার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হয় রেশন ঠিকঠাক আমজনতা পাচ্ছেন কি না! আবার মিড-ডে মিল যাতে সুচারুভাবে বন্টন হয়, তা-ও দেখছেন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকরা। পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরার পরে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা থেকে বাড়ি পৌঁছনো-সে কাজের দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই নানা স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুলাই দেবদত্তা রায় নামে এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মারা যান। যা তাঁদের ‘সামগ্রিক ব্যর্থতা’ বলেও মত প্রকাশ করেছিলেন কোনও কোনও ডব্লিউবিসিএস আধিকারিক।
এই পরিস্থিতিতে ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে অ্যাপটি। যার পোশাকি নাম ‘নিরলস আশ্বাস’। তা ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকরা ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। অ্যাপের মাধ্যমে সহায়তার চাইলে সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে। অ্যাপে রয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য— যোগাযোগের নম্বর, কোন কোন উপসর্গের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, কিসে ঝুঁকি, কি ভাবে তা ছড়ায়, আক্রান্তের অভিজ্ঞতার কথা। তার সঙ্গে রয়েছে হাসপাতালে ভর্তি প্রক্রিয়ার নিয়ম, সেখানে পৌঁছনোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিবহণের ফোন নম্বর ও তথ্য। টেলি মেডিসিনের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসকদের মোবাইল নম্বর, ওষুধ সংক্রান্ত তথ্য। কোভিড-১৯ নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্যও আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। তার কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল তার উল্লেখও রয়েছে। সঙ্গে থাকছে ডব্লিউবিসিএস-এর ইতিহাস, অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন তথ্যও।
অ্যাপে কোনও আধিকারিক সাহায্য চাইলে তার কাছে একটি টেক্সট মেসেজ যাবে। যেখানে থাকবে জেলার স্বেচ্ছাসেবকদের নাম এবং যোগাযোগ নম্বর। প্রতিটি জেলায় দু’জন করে আধিকারিক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন। একই ভাবে এই টেক্সট মেসেজ চলে যাবে রাজ্য স্তরের কোভিড সহায়ক দল, স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে। তথ্য পৌঁছবে সাধারণ সম্পাদকের কাছে।