প্রতীকী ছবি।
পরপর দু’বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। পরীক্ষা নিতে না-পারার হ্যাটট্রিক হোক, সেটা মোটেই চাইছে না উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এ বার ওই পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে সংসদ জানাচ্ছে, নির্ধারিত সূচি অনুসারে তারা অফলাইনেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ারই চেষ্টা করবে। সংসদ-সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “করোনা আবহে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কী হবে, তা নিয়ে পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকেরা খুবই চিন্তিত। বহু অভিভাবক ফোন করছেন আমাদের কাছে। অফলাইনেই যাতে পরীক্ষা নেওয়া যায়, আমরা সেই চেষ্টাই করব। তবে শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার এই বিষয়ে যে-সিদ্ধান্ত নেবে, কাজ হবে সেই অনুসারেই।”
শেষ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়েছিল ২০২০ সালে। সে-বার করোনার প্রকোপের মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা কোনও ভাবে শেষ করা গেলেও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করা যায়নি। বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা পাশ করেছিল। ২০২১ সালে করোনার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, দু’টি পরীক্ষাই পুরোপুরি বাতিল হয়ে যায়। প্রশ্ন উঠছে, এই বছরেও যদি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়, তা হলে পরপর তিন বছর পরীক্ষা হবে না। সেটা একেবারেই কাম্য নয় বলে মনে করছেন সংসদের কর্তারাও।
যারা এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দেবে, তারা এবং তাদের অভিভাবকদের বড় অংশও চান, অফলাইনেই পরীক্ষা হোক। তাঁদের মতে, এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা শেষ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দিয়েছে মাধ্যমিক। একাদশ থেকে দ্বাদশে ওঠার পরীক্ষা করোনার জন্য বাতিল হয়ে যায়। তাই এ বার যদি কোনও কারণে উচ্চ মাধ্যমিক বাতিল হয় এবং গত বারের মতো ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থীই পাশ করে যায়, তা হলে তারা শুধু মাধ্যমিক পাশের সুবাদে সরাসরি কলেজে পড়ার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে।
এক অভিভাবক বলেন, “এ বারেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা না-হলে হয়তো টেস্টের নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হবে। কিন্তু সেটা কি ঠিক মূল্যায়ন হবে? অনলাইনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া কার্যত অসম্ভব। আমরা চাই, দেরিতে হলেও উচ্চ মাধ্যমিক অফলাইনেই হোক।”
সংসদ ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে। পরীক্ষা শুরু ২ এপ্রিল। চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। করোনার জন্য এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হোম সেন্টারে অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের নিজের নিজের স্কুলে হওয়ার কথা। অভিভাবকদের বক্তব্য, প্রয়োজনে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু পরীক্ষাটা হোক। শিক্ষক-নেতা নবকুমার কর্মকার বলেন, “আমরা চাই, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক দু’টি পরীক্ষাই অফলাইনে হোক। কারণ, গত বার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। বিশেষ পদ্ধতির মূল্যায়নে ১০০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করে যায়। তাদের মধ্যে অনেকে পাশ করে গিয়েছে তালেগোলে, যাদের পাশ করার কথাই নয়। এ বার আমরা চাই, নির্দিষ্ট সূচি অনুযায়ী যদি না-ও হয়, একটু দেরি করে হলেও অফলাইনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হোক।”
মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে কি না, সেই বিষয়ে অবশ্য এখনই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।