সৌমেন পাত্র। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের হস্টেলে থেকে এতদিন পড়াশোনা চালিয়েছে সে। উচ্চমাধ্যমিকের ফল বেরোনোর আগেই কাজের খোঁজে চলে যায় দিল্লি। সেখানে ছোটখাটো কাজও জুটে যায়। ফল প্রকাশের পরে সৌমেন জানতে পেরেছে, ৪৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে মেধাতালিকায় অষ্টম স্থানে আছে সে। কিন্তু হলে কী হবে, বাবা জানিয়েছেন, তার পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে আতান্তরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার শ্রীরধরনগর পঞ্চায়েতের উপেন্দ্রনগর এলাকার সৌমেন পাত্র।
পড়াশোনা চালিয়ে যেতেই চায় সে। সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন চোখে। কিন্তু পথ খুঁজে পাচ্ছে না।
বিষয়টি শুনে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সমীর জানা বলেন, ‘‘ব্লকের গর্ব ছেলেটি। রাজ্যে অষ্টম স্থান অধিকার করে কারও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে, এটা হতে পারে না। আমরা সব রকম ভাবে ওর পাশে আছি।’’
সৌমেনের বাবা-মা বছর তিনেক ধরে দিল্লিতে থাকেন। বাবা তপন গাড়ি ধোয়ার কাজ করেন। কাকদ্বীপের বাবানগর হাইস্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেছে সৌমেন। তফসিলি স্কলারশিপের টাকা পেত।
উপেন্দ্রনগরে ইটের দেওয়াল, টিনের ছাউনি দেওয়া প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর সৌমেনদের। বড়দির বিয়ে হয়েছে। সৌমেন জানায়, সংসারের হাল ধরতে উচ্চ মাধ্যমিকের পরেই বাবা-মায়ের কাছে গিয়েছিল। সেখানে একটি অফিসে ছোটখাট কাজ পেয়ে যায়। তা নিয়েই ব্যস্ত এখন।
সৌমেন বলে, ‘‘রেজাল্টের খবর পেয়েও ফিরতে পারিনি। ফিরে কী করব! বাবা জানিয়ে দিয়েছেন, পড়ার খরচ চালানো তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না।’’ তপনের কথায়, ‘‘আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। ছেলে কাজে ঢুকেছে। সরকার যদি কিছু সাহায্য করে, তা হলে হয় তো আমার মেধাবী ছেলেটার স্বপ্নপূরণ হতে পারে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।