—প্রতীকী চিত্র।
পথকর বাকি রাখলে দূষণ সংক্রান্ত শংসাপত্র মিলবে না বলে আগেই নির্দেশ জারি করে জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের পরিবহণ দফতর। পুজোর আগে জারি করা ওই নির্দেশিকা সম্পর্কে সরকারি তরফে ব্যাখ্যা ছিল, কোনও গাড়ির পথকর বকেয়া থাকলে সেটি রাস্তায় নামতে পারবে না। এমন সমস্ত গাড়ি দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার জন্যও বিবেচিত হবে না। সেই সঙ্গে ওই একই নির্দেশিকায় দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পেতে হলে ট্র্যাফিক আইন ভাঙা সংক্রান্ত জরিমানা-সহ অন্যান্য বকেয়া মেটানোর কথাও উল্লেখ করা ছিল।
ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গে জরিমানার প্রসঙ্গে বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাব, স্কুলগাড়ির মালিকেরা বলছেন, পথকর মেটানো নিয়ে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু জরিমানা না মেটালে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র না পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের আপত্তি উঠে এসেছে। পুজো মেটার পরে বেসরকারি বাস, অ্যাপ-ক্যাব, ট্যাক্সিমালিকদের একাংশ দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নিতে গিয়ে বকেয়ার অঙ্ক দেখে প্রমাদ গুনছেন। জানা গিয়েছে, কোনও কোনও বাসের ক্ষেত্রে বকেয়া জরিমানার অঙ্ক ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকাও হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্র্যাফিক আইন ভাঙার ক্ষেত্রে জরিমানা এখন ১০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০০ টাকা। গণপরিবহণের মালিকদের অভিযোগ, ওই সব কেস বহু ক্ষেত্রেই দেওয়া হয় নির্দিষ্ট গাড়ির চালকের অজানতে। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, অতীতে এই ধরনের মামলার নিষ্পত্তির জন্য লোক আদালতে যাওয়ার সুবিধা ছিল। কিন্তু, সাম্প্রতিক সরকারি নির্দেশিকায় সেই সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাহুল জানান, এ নিয়ে তাঁরা তাঁদের সংগঠনের তরফে পরিবহণ সচিবকে চিঠিও দিয়েছেন।
একই কথা শোনা গিয়েছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গের মামলা নিয়ে আদালতে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়।’’ ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘যে সব কারণে ট্র্যাফিক আইন ভাঙার মামলা দেওয়া হয়, তার অনেক ক্ষেত্রেই উপযুক্ত কারণ থাকে না। এর মধ্যে জরিমানা আদায় নিয়ে জোরাজুরি হলে বিষয়টি চাপিয়ে দেওয়ার পর্যায়ে যাচ্ছে।’’ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে বাস, অ্যাপ-ক্যাব, স্কুলগাড়ির বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘জয়েন্ট ফোরাম অব ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্স’ও। পরিবহণ দফতর সরাসরি মুখ খোলেনি। কর্তারা শুধু জানাচ্ছেন, এ নিয়ে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।