মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, ধারাবাহিক ভাবে এমন ঘটনা ঘটে চললেও, গোয়েন্দারা কেন আগে থেকে সেই খবর জানতে পারছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতির ঘটনা নিয়েও উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশের। এই পরিস্থিতিতে গণপিটুনি ও ডাকাতির ঘটনা রুখতে পুলিশের জন্য নির্দেশিকা জারি করল ভবানী ভবন।
মঙ্গলাবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই গণপিটুনি আটকাতে ব্যর্থ হওয়া পুলিশকে তিরস্কার করেছিলেন তিনি। সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। পুলিশের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। এলাকায় এলাকায় পুলিশকে সোর্স তৈরি করতে হবে। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ তার প্রেক্ষিতেই ভবানী ভবন থেকে জারি হল ১১ দফা নির্দেশিকা।
১। গত কয়েক সপ্তাগে রাজ্যে গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সকল পুলিশ অফিসারকে সে ব্যাপারে অবগত করতে হবে।
২। খবর সংগ্রহের জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশকে আরও ভাল ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে। যাতে পুলিশের কাজ সহজ হয়।
৩। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচার চালাতে হবে।
৪। স্থানীয় ক্লাবগুলিকেও কাজে লাগানো যেতে পারে খবর সংগ্রহের জন্য।
৫। সমাজমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অনেক জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। তা আটকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।
৬। সমাজমাধ্যমে নজরদারি বাড়াতে হবে। যাঁরা গুজব রটাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।
৭। অনেক জায়গায় স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। এই ধরনের ঘটনা আটকাতে ডাকাতদলগুলিকে ধরতে হবে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে এবং সঠিক খবর সংগ্রহ করতে হবে। বিভিন্ন ডাকাতদল সম্পর্কে আরও তথ্য জোগাড় করতে হবে। সেই জন্য বিহার ও ঝা়ড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
৮। ডাকাতদলের ধৃত সদস্যদের কী বিচার হচ্ছে, সে দিকে দেখতে হবে। তাঁরা যাতে সাজা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৯। নাকা চেকিংয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
১০। সম্প্রতি কিছু খুনের ঘটনাও ঘটেছে। যেখানে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ব্যবহার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা উদ্ধার অভিযান জারি রাখতে হবে। থানার পুলিশ অফিসারদের এ ব্যাপারে বিশেষ সজাগ থাকতে হবে। এই প্রক্রিয়ার উপর নজরদারি চালাতে হবে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের।
১১। মহিলাদের সঙ্গে কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে, তাতে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে।