গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্দেশখালি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। গত চার বছর ধরে এত অভিযোগ জমা পড়ার পরেও কেন কেউ গ্রেফতার হননি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। তার প্রেক্ষিতে রাজ্য যখন জানাল যে, তারা ‘বেদখল’ হয়ে যাওয়া জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করছে, তখন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘তার মানে কিছু একটা ঘটেছে। আর প্রমাণের কী দরকার! সরাসরি সাজা দিতে হবে।’’
রাজ্যের পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার আগেই সন্দেশখালিতে ‘ভুলের’ কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন। গত সপ্তাহে বেড়মজুর অশান্ত হয়ে ওঠার পরেই সেখানে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘ভুল হয়েছে...। মানছি তো।’’
সোমবার রাজ্য আদালতে জানিয়েছে, গত চার বছরে সন্দেশখালিতে ৪৩টি এফআইআর হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টিতে চার্জশিট হয়েছে। তার মধ্যে সাতটি জমি দখলের অভিযোগ। ধর্ষণের ধারাও যুক্ত হয়েছে। বাকি সব অভিযোগের তদন্ত চলছে। যদিও ওই সব মামলায় কেউ গ্রেফতার হননি বলেই আদালতে জানিয়েছেন রাজ্যের কৌঁসুলি। তাতে বিস্মিত হন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘৪২টা মামলার চার্জশিট দিতে চার বছর লেগে গেল?’’ আদালত পরে চার্জশিটও খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
গত জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনার পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার সেখানে গন্ডগোল শুরু হয়েছে। যা থামার কোনও লক্ষণই নেই। সোমবার রাজ্য আদালতে জানিয়েছে, নতুন করে গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত সন্দেশখালিতে দায়ের হওয়া বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে মোট ২৪টি এফআইআর হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন মোট ১৫। সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আদালতে বিরোধী পক্ষের অভিযোগ ছিল, ১৪৪ ধারার কারণ দেখিয়ে বিরোধীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না সন্দেশখালিতে। কিন্তু সেখানে অবাধে যেতে পারছেন শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা। তার প্রেক্ষিতে রাজ্যের পাল্টা বক্তব্য ছিল, যেখানে ১৪৪ ধারা ছিল, সেখানে যাননি রাজ্যের মন্ত্রীরা।