১০৮টি পুরসভার ভোটেও সব বুথে সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশের আগে পর্যন্ত সেই সব সিসি ক্যামেরার ছবি সংরক্ষণ করতে হবে। সংরক্ষণ করতে হবে ভোটযন্ত্রের তথ্যও। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৭ মার্চ।
ফাইল চিত্র।
চার পুর নিগমের ক্ষেত্রে যা হয়েছিল, রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার আসন্ন ভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রশ্নে একই ভাবে সেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, আধাসেনা নিয়োগ না-করলে শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোটের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকেই দায়িত্ব নিতে হবে বলে উচ্চ আদালতের নির্দেশে জানানো হয়েছে। চার পুর নিগমের নির্বাচনেও ঠিক এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানিয়েছে, ১০৮টি পুরসভার পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং পুলিশের ডিজি-র সঙ্গে বৈঠক করবেন। পুরভোটে পর্যবেক্ষক নিয়োগ-সহ আরও কিছু নির্দেশও এ দিন দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালত জানিয়েছে, ১০৮টি পুরসভার ভোটে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য রাজ্যের নিরপেক্ষ আইএএস অফিসারদের নিয়োগ করতে হবে। ভোট সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ থাকলে তা জানানো যাবে পর্যবেক্ষকদের কাছে।
উচ্চ আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েও রাজ্যের বিরোধী দলগুলির নেতা-কর্মীদের অনেকের এবং রাজ্যবাসীর একাংশের বক্তব্য, কোর্ট ভোটের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথা ভেবে পর্যবেক্ষক নিয়োগের কথা বলেছে। কিন্তু এ রাজ্যের প্রশাসনে নিরপেক্ষ আইএএস অফিসার কি কার্যত সোনার পাথরবাটি নয়?
রাজ্য জুড়ে পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন-সহ কয়েকটি আর্জি নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। সেগুলির শুনানি হয়েছে একত্রে। কলকাতা পুর নিগমের ভোটে রাজ্য পুলিশের উপরেই আস্থা রেখেছিল হাই কোর্ট। তার পরের দফায় চারটি পুর নিগমের ভোটে আধাসেনা মোতায়েন করা না-করার সিদ্ধান্তের ভার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরেই ন্যস্ত করে আদালত। প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিপক্ষে সওয়াল করেছে কমিশন এবং রাজ্য সরকার। তাই স্বাভাবিক ভাবেই পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি।
চারটি পুর নিগমের ভোট মিটতেই ফের আদালতে আর্জি জানানো হয়। এই দফার শুনানিতে কমিশনের কৌঁসুলি জয়ন্ত মিত্র এবং সোনাল সিনহা জানান, চারটি পুর নিগমের ভোটে রাজ্য পুলিশ নির্ভরযোগ্য ভাবে কাজ করেছে। প্রশাসনের কর্তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলে রাখবেন বলে কমিশনকে জানান। মামলাকারীদের অভিযোগের পিছনে কার্যত কোনও জোরালো তথ্যপ্রমাণ নেই বলেও উল্লেখ করেন তাঁরা।
এই দফার সওয়াল-জবাবে পুরভোটে দুয়ারে সরকার এবং পাড়ায় সমাধান প্রকল্প বন্ধ রাখারও আর্জি জানানো হয়েছিল। তবে হাই কোর্ট জানিয়েছে, ভোটে চালু থাকা সরকারি প্রকল্প এবং জনস্বার্থমূলক কাজে কোনও বাধা নেই। কমিশনও এই বিষয়ে আপত্তি করেনি। তাই দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি চালু থাকবে। কাঁথির মহকুমাশাসক ভোটযন্ত্র সিল না-করার নির্দেশ জারি করেছেন। সরকার পরে আদালতে জানায়, সেই নির্দেশ সংশোধন করা হয়েছে। ভোটযন্ত্র নিয়মমাফিক সিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
১০৮টি পুরসভার ভোটেও সব বুথে সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশের আগে পর্যন্ত সেই সব সিসি ক্যামেরার ছবি সংরক্ষণ করতে হবে। সংরক্ষণ করতে হবে ভোটযন্ত্রের তথ্যও। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৭ মার্চ।