মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই প্রথম শিলিগুড়ি পুরনিগম তৃণমূলের হাতে এল। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখেও এই পুরনিগমের প্রায় সব ওয়ার্ডেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। পুরনির্বাচনে সেই ফল ঘুরে গিয়ে বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই তৃণমূলের রমরমা। ভোটের ফল প্রকাশ হতেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন সেখানে গৌতম দেব মেয়র হবেন। একই সঙ্গে তিনি এক হাত নিয়েছেন বিজেপি-কেও। তাঁর মতে, উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেনি বিজেপি। পুরভোটে তারই রায় দিয়েছে মানুষ।
সোমবার মমতা মন্তব্য করেন, শিলিগুড়িতে গত নির্বাচনে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু মানুষের জন্য কিছু করেনি। শুধু শিলিগুড়ি কেন, উত্তরবঙ্গের বহু জায়গায় বিজেপি জিতেছে। কিন্তু কোনও উন্নয়ন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, “দার্জিলিং, শিলিগুড়ির জন্য কাজ করার কথা ছিল তা করেনি। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরেও কোনও কাজ করেনি বিজেপি। দক্ষিণবঙ্গের কথা তো ছেড়েই দিন। যা করেছি আমরাই।”
বিজেপি-র পাশাপাশি সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেন মমতা। এই তিন দলকে ‘জগাই-মাধাই-গদাই’-এর জোড়ি বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। তৃণমূলনেত্রীর কথায়, “বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি-র হাতে ভোট তুলে দিয়েছিল সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনেও তাই করেছে। কখনও বিজেপি সিপিএমকে ভোট দেয়, কখনও সিপিএম বিজেপি-কে, কখনও বিজেপি-কে ভোট দেয় কংগ্রেস, কখনও আবার কংগ্রেস বিজেপি-কে।”
শিলিগুড়িতে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। শিলিগুড়ির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হচ্ছে নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে। শিলিগুড়ির রাস্তা, ফ্লাইওভার, তিস্তা টাউন-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে তৃণমূলের সরকার কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা। চার পুরনিগমের ভোটে তৃণমূল বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছে। মানুষের এই রায়ের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “এই জয় মানুষের। তবে যে কোনও দয় আমাদের আরও বেশি করে নম্র এবং মানবিক হতে সাহায্য করে।”
এ বারের ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবেও হয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলনেত্রী। একই সঙ্গে কোনও রকম প্ররোচনায় পা না দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন কর্মী সমর্থকদের। তাঁর কথায়, “শান্তির পক্ষে কাজ করতে হবে আমাদের।” কে দ্বিতীয়, তৃতীয় হচ্ছে বা কার জামানত জব্দ হচ্ছে তা নিয়ে তিনি ভাবিত নন বলেও জানিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, “আমি আমাদের নিয়ে চিন্তিত। কে দ্বিতীয়, তৃতীয় হল তা নিয়ে আমার মাথব্যথা নেই।”