রাজ্যের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল এবং বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানো যেতে পারে। ফাইল চিত্র।
লোকাল ট্রেন চালাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। নিউ নর্মালে পরিষেবা শুরুর বিষয়ে আগেই রাজ্যকে চিঠি দিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল রেল। শনিবার রাজ্যের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল এবং বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানো যেতে পারে।
রেলের ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ ট্রেনে ওঠা নিয়ে প্রায়ই ঝামেলা লেগে থাকছে বিভিন্ন স্টেশনে। এ দিনও হাওড়ায় ট্রেনে ওঠা নিয়ে ফের যাত্রী এবং রেলপুলিশের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়। ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। অভিযোগ, অবস্থা আয়ত্তে আনতে রেলপুলিশ লাঠিও চালিয়েছে। ওই ঘটনার পরই অসন্তোষ প্রকাশ করে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর বিষয়ে রেলকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য। তবে চিঠিতে বলা হয়েছে, লোকাল ট্রেন চালু হলেও কঠোর ভাবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। তবেই লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে রাজ্য তাদের অনুমতি দেবে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করে মেট্রো চালানো সম্ভব হয়েছে। সে রকম কোনও ‘মডেল’-এর মাধ্যমে লোকাল ট্রেনও চালু করা যেতে পারে। পূর্ব রেলের জিএম-এর কাছে সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিত্য লোকাল পরিষেবা শুরুর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রেলের। বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের জন্য বিশেষ গোলাকার চিহ্ন করা হয়েছে। যাতে ট্রেনে ওঠার আগে তাঁরা পরস্পরের থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় দাঁড়াতে পারেন। টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানোর জন্যেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ দিন রাতে রেলের এক কর্তা বলেন, “চিঠি পৌঁছেছে। দু’পক্ষের আলোচনার পর পরিষেবার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রাজ্যের তরফে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল এবং বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে দৈনিক সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি, কমল সংক্রমণের হারও
লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে রেলকে পাঠানো চিঠিতে নিত্য যাত্রীভোগান্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত, ওই চিঠিতে উষ্মা প্রকাশ করেই বলা হয়েছে, শুধুমাত্র রেলের কর্মীদের জন্য ট্রেন চলছে। কিন্তু অন্যান্য সরকারি কর্মচারী এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রাজ্যে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাধ্যম চালু হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়েছে বিমান পরিষেবাও। কিন্তু রেল শুধু তাদের কর্মীদের জন্যই পরিষেবা চালাচ্ছে। এ দিনের ঘটনায় যাত্রীদের উপরে রেলপুলিশের লাঠিচার্জ এবং সামগ্রিক ভাবে রেলপুলিশের ব্যবহার নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে রাজ্যের তরফে লেখা চিঠিতে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট আদৌ হবে তো, সংশয়
এখন দেখার, লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার জন্য রাজ্যের সঙ্গে কবে আলোচনায় বসে রেল। এ-ও দেখার যে, ওই আলোচনায় কী কী সমাধানসূত্র বেরোয় এবং তার পর কবে থেকে লোকাল ট্রেন চালু করা হয়। প্রসঙ্গত, হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে লোকাল ট্রেন রোজ লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন। ফলে লোকল ট্রেন চালু হলে তাঁদের যেমন সুবিধা, তেমনই স্টেশনে এবং ট্রেনে বহু হকার এবং ছওট ব্যবসাযীদেরও রুজি-রোজগারের সুরাহা হতে পারে। তবে নিউ নর্মালে হকার বা ছোট ব্যবসায়ীরা আগের মতো ব্যবসা করতে পারবেন কি না, তা-ও দেখার।