মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আনুষ্ঠানিক সূচনার ২৪ ঘণ্টা আগেই জেলায় জেলায় আবাস প্রকল্পের প্রথম কিস্তির বরাদ্দ পাঠিয়ে দিল রাজ্য সরকার। আজ, মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বরাদ্দ বিতরণ কর্মসূচি শুরু করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগে সোমবারই প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বরাদ্দ দিয়ে দিল নবান্ন।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, জেলাভিত্তিক উপভোক্তাদের হিসেব কষে এক একটি জেলায় কয়েকশো কোটি করে টাকা পাঠানো হয়েছে। প্রথম কিস্তিতে এক এক জনকে ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, আবাসের তালিকায় সব মিলিয়ে প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তা রয়েছেন। অতিরিক্ত আরও এক লক্ষকে একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হবে, যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে প্রাকৃতিক কোনও বিপর্যয়ের কারণে। সব মিলিয়ে এই দফায় গোটা রাজ্যের জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৭২০০কোটি টাকা।
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, শুরুতে স্থির ছিল প্রত্যেক উপভোক্তার জন্য একটি করে অভিন্ন নম্বর (ইউনিক আইডি) তৈরি হবে। যার ভিত্তিতে বরাদ্দ ছাড়বে সরকার। কিন্তু প্রযুক্তিগত কিছু জটিলতার কারণে আপাতত সেই পথে হাঁটছে না নবান্ন। বরং চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া উপভোক্তাদের একটি ‘মাস্টার রোল’ তৈরি করে ট্রেজারির মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো হবে। গোটা প্রক্রিয়াটির উপর নজর রাখবেন জেলাশাসকেরা।
এক কর্তার কথায়, “উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানো নিয়ে ইতিমধ্যেই অর্থ দফতর কিছু বিধির সুপারিশ করেছে। যাতে একমাত্র প্রকৃত উপভোক্তাই টাকা পাবেন। একের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে না যাওয়া অথবা ভুয়ো অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঠেকাতে সেই বিধি মেনে চলতে হবে। ইতিমধ্যেই প্রত্যেক উপভোক্তার অ্যাকাউন্ট যাচাই করা হয়েছে।”
আজ, মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতির বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠক থেকেই আবাসের টাকা বিতরণ কর্মসূচির সূচনা করার কথা তাঁর। সূত্রের দাবি, সেই কারণে প্রতিটি জেলা থেকে কয়েক জন করে উপভোক্তা উপস্থিত থাকবেন। তাঁদের হাতে প্রতীকী শংসাপত্র তুলে দেবেন মমতা। তার পর থেকেই প্রত্যেক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু করবে জেলা প্রশাসনগুলি।
দ্বিতীয় কিস্তিতেও প্রত্যেক উপভোক্তাকে ৬০ হাজার করে টাকা পাঠাবে সরকার। তাতেও প্রায় ৭২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রের অনুমান, সেই বরাদ্দ দেওয়া হবে অন্তত মাস চারেক বাদে, বাড়ি তৈরির কাজ বেশ কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরে। এক কর্তার কথায়, “সে ক্ষেত্রে নতুন আর্থিক বছরেই বরাদ্দ পাঠানো হবে। কারণ, আগামী মার্চ মাসে চলতি আর্থিক বছর (২০২৪-২৫) শেষ হবে। তাতে সরকারেরও সুবিধা। তার আগে বিপুল সংখ্যক বাড়ি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের জোগান যাতে স্বাভাবিক থাকে, তা-ও দেখতে হবে জেলাগুলিকেই।” সব মিলিয়ে এক একজন উপভোক্তা বাড়ি তৈরির জন্য পাবেন মোট এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে। সরকারি বিধি অনুযায়ী, দুর্গম এলাকার উপভোক্তাদের জন্য সেই বরাদ্দ এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে।