সুকান্ত মজুমদার এবং রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডের আবহে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের উপর হামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের পাঁচ প্রশাসনিক কর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছে লোকসভার স্বাধিকার কমিটি। যাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তিনি কি সংসদীয় কমিটির ডাকে দিল্লি যাচ্ছেন সোমবার, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা অব্যাহত। রাজীবকে সেই প্রশ্ন করা হলেও, কোনও জবাব মিলল না তাঁর কাছ থেকে।
শনিবার সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজীব। ইডির উপর হামলার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত শাহজাহান শেখকে কেন এখনও গ্রেফতার করা যায়নি, তার জবাবও দেন ডিজি। সন্দেশখালিতে কবের মধ্যে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করার ভাবনা রয়েছে পুলিশ প্রশাসনের, তা-ও জানিয়েছেন রাজীব। সেই সময়েই রাজীবের কাছে সংসদীয় কমিটির তলব নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি কমিটির মুখোমুখি হবেন কি না। কিন্তু সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি রাজীবের থেকে।
১৯ ফেব্রুয়ারি স্বাধিকার কমিটি ডেকে পাঠিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিক, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান এবং বসিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষকে। সেই ডাকে সংশ্লিষ্টেরা সাড়া দেবেন কি না, নবান্ন থেকে তার স্পষ্ট বার্তা পাওয়া না গেলেও বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, এই ডাক এড়ানো কার্যত অসম্ভব।
রাজ্যের অভিজ্ঞ প্রশাসনিকদের একাংশের মত, কোনও রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের এ ভাবে সংসদীয় কমিটির ডেকে পাঠানো অভূতপূর্বই। তাঁদের বক্তব্য, লোকসভার স্বাধিকার কমিটির ক্ষমতা অসীম। তারা শাস্তির সুপারিশও করতে পারে, যার গুরুত্ব কার্যত সর্বোচ্চ। তাঁদের আরও মত, ডাক পাওয়া শীর্ষ আধিকারিকেরা আইএএস বা আইপিএস। সর্বভারতীয় চাকরিতে তাঁদের উপর কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ তো রয়েছেই। ফলে অন্যথা হলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আশঙ্কা তো থেকেই যায়।
যদিও প্রশাসনিক মহলের অন্য একটি অংশ পাল্টা যুক্তিও দেখাচ্ছে। তাঁদের মত, রাজ্যের যে তিন পুলিশকর্তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে, তাঁরা সন্দেশখালির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্যস্ত। সেখানে আইনশৃঙ্খলা, শান্তি ফিরিয়ে দায়িত্ব তাঁদের হাতে। কিন্তু যে ভাবে প্রতি দিন ওই রাজনৈতিক কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ওই এলাকা, তাতে তাঁদের পক্ষে এলাকা ছেড়ে দিল্লি যাওয়া কার্যত অসম্ভব। জেলাশাসকের উপরেও তার দায় বর্তায়। ফলেও তাঁর পক্ষেও কতটা যাওয়া সম্ভব হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়।