মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবারের অনলাইন ভাষণে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ নিয়ে বাক্যবাণে বিদ্ধ করেছিলেন অমিত শাহ। পর দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতার দাবি, এমন কোনও মন্তব্যই তিনি করেননি। উল্টে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্ভোগের জন্য কেন্দ্রের দিকে ফের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, “একটি ট্রেনের মধ্যে চাপাচাপি করে যে ভাবে শ্রমিকদের পাঠানো হয়েছে তা অন্যায়। কেন সুস্থ পরিযায়ীদের বিপদের মুখে ফেললেন? আপনিই তো অন্যায় করলেন।”
মমতার মতে, কেন্দ্রীয় সরকার “লকডাউনের আগে ৭ দিন ধরে শ্রমিক এক্সপ্রেস চালিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পারতেন পরিযায়ী শ্রমিকদের। তা হলে এমন অবস্থা হত না। দেখেও তো শিক্ষা নিতে পারেন। এখানে তো কোনও সমস্যা হয়নি। এখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলা থেকে ফিরে যেতে চায়নি। বাংলায় ঘর আছে। থাকার জায়গা আছে।”
করোনা এবং আমপানের মতো বিপর্যয়কে হাতিয়ার করে অমিত রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন মমতার দিকে। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকবাহী যে ট্রেনকে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ আখ্যা দিয়েছেন, সেই ট্রেনই হবে তাঁর সরকারের ‘এক্সিট এক্সপ্রেস’। মমতার জবাব, “কোনও দিনই করোনা এক্সপ্রেস বলিনি। পাবলিক বলছে, এটা বলেছিলাম। বিজেপির বেশি মাথা ব্যথা, তা-হলে কেন এমন কাজ করেছেন আপনারা? মহারাষ্ট্রের লোকেরা কষ্টে রয়েছেন। দিল্লিতেও সমস্যা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: বাংলার যুবশক্তি: জনভিত্তি বাড়াতে নয়া নেটওয়ার্ক অভিষেকের নেতৃত্বে
পরিসংখ্যান দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এ রাজ্যের তরফে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, “এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক পৌঁছে গিয়েছেন। ২৫৫ ট্রেনে এসেছেন বা আসছেন তাঁরা। আর ২২টি ট্রেন আসা বাকি আছে। ওই ট্রেনে আরও ৩০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক আসবেন। বাসেও অনেকে এসেছেন।”
আরও পড়ুন: হু হু করে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ, মহা-শঙ্কায় দিল্লি
এ রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি মমতা বলেন, “বাইরে থেকে ফিরে আর ১৪ দিন থাকতে হবে না। ৭ দিনের মধ্যেই কোভড-১৯ টেস্ট করা হবে। যাঁদের নেগেটিভ হবে, তাঁদের আর থাকতে হবে না। পজিটিভ হলে নিয়ম মেনে চিকিৎসা হবে।”
সেই সঙ্গে রাজ্যে বেশি সংখ্যায় টেস্টও হচ্ছে বলে মনে করিয়ে দেন তিনি। বলেন, “রাজ্যে টেস্ট বেশি হচ্ছে। নম্বর বাড়বে। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আতঙ্কিত হওয়ারও কারণ নেই। ওরা কার্ফু বলেছিলেন। আমরা তা করিনি।”