Howrah Water Crisis

হাওড়ায় এখনও জলের হাহাকার! কলকাতা থেকে গাড়ি গেলেও তেষ্টা মিটছে না! সঙ্কট মিটবে কবে?

গত বৃহস্পতিবার থেকে জলের সঙ্কটে ভুগছে হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সমস্যা কত দিনে মিটবে, তা-ও স্পষ্ট নয় এখনও। প্রশাসনের তরফে দু’দিনের কথা বলা হলেও, তা কত দূর সম্ভব হবে, সন্দিহান বাসিন্দারা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১৩:৪৫
Share:
(উপরে) জলের জন্য লম্বা লাইন। পাইপলাইন মেরামতির কাজ চলছে (নীচে)।

(উপরে) জলের জন্য লম্বা লাইন। পাইপলাইন মেরামতির কাজ চলছে (নীচে)। —নিজস্ব চিত্র।

গত বৃহস্পতিবার থেকে জলের সঙ্কটে ভুগছে হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সমস্যা কত দিনে মিটবে, তা স্পষ্ট নয় এখনও। প্রশাসনের তরফে দু’দিনের কথা বলা হলেও, তা কত দূর সম্ভব হবে, সন্দিহান বাসিন্দারা।

Advertisement

বেলগাছিয়ায় ধসের জেরে পাইপলাইন ফেটে যে বিপত্তি দেখা গিয়েছে, তাতে সব মিলিয়ে হাওড়ার অন্তত ২২টি ওয়ার্ডে ব্যাহত জল সরবরাহ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে হাওড়ায় জলের গাড়ি পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কোনও কোনও ওয়ার্ডে কোন্নগর এবং উত্তরপাড়া পুরসভার জলের গাড়িও গিয়েছে। কিন্তু তাতেও তেষ্টা মিটছে না হাওড়ার। শনিবার সকাল থেকেই উত্তর ও মধ্য হাওড়া এবং শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে বটে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। উত্তর হাওড়ার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রান্না-খাওয়ার জল নেই ঘরে। এ ভাবে আর কত দিন চলবে? প্রশাসন বলছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হচ্ছে। কিন্তু তাতে লাভটা কী হচ্ছে!’’

জলের সমস্যা মেটাতে হাওড়ার বেলগাছিয়া মোড়ে একটি বিকল্প পাইপলাইন জোড়ার কাজও করছে পুরসভা। সেই কাজ পরিদর্শনে গিয়ে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শিবপুর ও মধ্য হাওড়ায় জলের সমস্যা আজ, অর্থাৎ শনিবারের মধ্যে মিটে যাবে। নতুন পাইপলাইন জোড়া হলে উত্তর হাওড়ায় জল সরবরাহ করা যাবে। আগামিকাল বা পরশুর মধ্যে সেই কাজ হবে। অর্থাৎ, এখনও দু’দিন লাগবে কমপক্ষে। অতিরিক্ত জলের গাড়ি পাঠানো হচ্ছে উত্তর হাওড়ায়। পরিস্রুত জলের পাউচ পাঠানো হচ্ছে।’’

Advertisement

পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের মূল পাইপলাইনটি গিয়েছে বেলগাছিয়া মোড় থেকে এফ রোড হয়ে, বেলগাছিয়া ভাগাড়ের পাশ দিয়ে। আবার সেটির পাশ দিয়েই গিয়েছে উত্তর হাওড়ার মূল নিকাশি নালা। আর তাতেই হয়েছে বিপত্তি। শহরের সমস্ত আবর্জনা জমে কার্যত পাহাড়ের আকার নিয়েছে ওই ভাগাড়। যেখানে প্রায়ই ধস নেমে এলাকার মূল নিকাশি নালা অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। জমা আবর্জনা থেকে মিথেন গ্যাস বেরিয়ে আগুনও লেগে যায় প্রায়ই। ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে মাটির তলায় ধসের জেরে জলের পাইপলাইন ফেটে গিয়েছিল। যার জেরে জল সরবরাহ বন্ধ উত্তর হাওড়ার ১৪টি ওয়ার্ড, শিবপুরের চারটি ওয়ার্ড এবং মধ্য হাওড়ার দু’টি ওয়ার্ডে।

এক দিকে ধসের জেরে বহু বাড়িতে ফাটল, অন্য দিকে জলের জন্য হাহাকার— সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যে ঘোরালো হতে চলেছে, তা আঁচ করে শুক্রবার কেএমডিএ-র কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন পুরসভার আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা। আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসাবে বেনারস রোডের বেলগাছিয়া মোড় পর্যন্ত এসে কাজ বন্ধ হয়ে থাকা একটি পাইপলাইন বসাতে শুরু করেছে পুরসভা ও কেএমডিএ।

কিন্তু দফায় দফায় বৃষ্টির জেরে শনিবার ফের ধস নামায় সেই কাজ বাধা পেয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রাজ্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় কাজের অগ্রগতি সরেজমিন দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘একটা বিপর্যয় ঘটেছে। যার ফলে পুরসভায় জল সরবরাহ ব্যাহত হয়। বিভিন্ন পুরসভা থেকে জলের গাড়ি এনে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী দু’দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement