শরৎ সিংহ ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। (বাঁ-দিকে) মৃতের ঘর থেকে উদ্ধার সুইসাইড নোট। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন স্ত্রী। তার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার সপ্তাহ তিনেক পর স্ট্যাম্প পেপারে সুইসাইড নোট লিখে ‘আত্মঘাতী’ হলেন পূর্ব বর্ধমানের এক ক্ষেতমজুর। তাতে স্ত্রী, দুই পুলিশ আধিকারিক-সহ চার জনকে দায়ী করেছেন তিনি। এই ঘটনার আসল কারণ জানতে তদন্তে নেমেছে কালনা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম শরৎ সিংহ (৪২)। সোমবার কালনা থানার আশ্রমপাড়ায় তাঁর বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় শরতের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়। তাঁর পাশে পড়ে ছিল ৫০ টাকার একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে’ লেখা সুইসাইড নোট। তাতে চার জনকে দায়ী করেছেন শরৎ। তবে কী কারণে সুইসাইড নোটে ‘আত্মঘাতী’ হওয়ার কারণ উল্লেখ করা নেই। তবে ওই নোটে স্ত্রী এবং তাঁর শ্বশুরবাড়ির এক আত্মীয়-সহ কালনা থানার বড়বাবু ও মেজবাবুর নাম রয়েছে। কেনই বা ওই চার জনকে দায়ী করা হল, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মঙ্গলবার কালনা হাসপাতাল মর্গে মৃতের ময়নাতদন্ত করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শরৎ ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কী কারণে তিনি ‘আত্মঘাতী’ হলেন, সে বিষয়ে তাঁর পরিবারের লোকজন কিছু জানাতে পারেননি।
মৃতের আত্মীয় রঞ্জন সিংহ, তাপস হালদার এবং ভাস্কর শীল-রা জানিয়েছেন, সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সপ্তাহ তিনেক আগে অন্যত্র চলে যান শরতের স্ত্রী। নানা জায়গায় খোঁজ চালিয়েও তাঁদের সন্ধান না পেয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন শরৎ। এমনকি, ওই ঘটনার পর থেকে মনমরা হয়ে বাড়িতেই থাকতেন। তাঁদের দাবি, সোমবার ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করার পর বিকেল গড়িয়ে গেলেও শরতের সাড়াশব্দ না পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় শরৎ বাবুকে ঝুলতে দেখেন। মৃতের ভাইপো রঞ্জন সিংহের দাবি, ‘‘কাকিমা চলে যাওয়ার পর থেকে কাকা মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন।’’