সমরেশ দাস ও মামুদ হোসেন
দু’জনেই এক দল ছেড়ে অন্য দলে এসেছেন। তাই বিপক্ষের ভোট কাটাকাটির অঙ্কেই নির্ভর করছে সমরেশ দাস ও মামুদ হোসেনের জয়ের সম্ভাবনা। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
২০০৯ সালে উপনির্বাচনে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে প্রার্থী হয়ে প্রথমবার বিধায়ক হয়েছিলেন সমরেশ দাস। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের আবহে ও নিজে বাম নেতা হওয়ার সুবাদে ভাঙিয়ে এনেছিলেন বামেদের ভোট। তাতে জয় সুনিশ্চিত হয়েছিল। পরিবর্তনের হাওয়ায় ২০১১ সালে জোট প্রার্থী সমরেশবাবুর জয়ের ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় পনেরো হাজারে। দু’টি ক্ষেত্রেই কিন্তু প্রার্থী হিসাবে সমরেশবাবুর বিরুদ্ধে গিয়েছিল দলের একাংশ। আর গত লোকসভা ভোটে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিরুদ্ধ প্রচার সত্ত্বেও এই কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়েছিল ছাব্বিশ হাজার ভোটে। তাঁর বিরুদ্ধে দলের গোষ্ঠী বিদ্রোহ নিয়ে বিব্রত সমরেশবাবু। দলের অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধি তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে লিখিতভাবে দলের কাছে তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আপত্তিও জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও লড়াইকে সহজ মনে হয়েছিল তৃণমূলের। কিন্তু, তৃণমূলের জেলা নেতা ও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেনকে ভাঙিয়ে নিয়ে বিপক্ষের প্রার্থী করে তৃণমূলের জয়ের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছে বামেরা। সমরেশবাবুর দাবি, “যেটুকু ক্ষোভ ছিল তা প্রায় মিটেই গিয়েছে। বিক্ষুব্ধ নেতা কর্মীরা দলের সমর্থনেই কাজ করছেন।” কিন্তু সঙ্কট অন্যত্র। দলেরই এক নেতা স্বীকার করছেন, ১৯৭২ সালের পর থেকে এগরা কেন্দ্রে কোনও সংখ্যালঘু মুখ প্রার্থী হয়নি। মামুদবাবু সেই সহানুভূতির ভোট পেলেই বিপদ তৃণমূলের। এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটার প্রায় ২২ শতাংশ। দলীয় বিক্ষুব্ধ ও সংখ্যালঘু ভোটের উপর নির্ভর করছে সমরেশবাবুর জয়।
তৃণমূলে থাকাকালীনও মামুদ সমরেশের বিরোধী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। বিধানসভায় টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভে দল ছেড়ে নাম লেখান ডিএসপিতে। মামুদ হোসেনের কথায়, ‘‘এতদিনের উপেক্ষার জবাব দেবেন সংখ্যালঘুরা। তাঁরা আমার পাশেই থাকবেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিরও একই মত যে, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ ভোট ও সংখ্যালঘু ভোট এবার তাঁরা অনেক বেশি করে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। ডিএসপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুকুমার রায় বলেন, “তৃণমূলের ভোট কব্জা করার কৌশল মামুদবাবু জানেন।”