তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক এবং প্রশাসনিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাঁকে শো কজ করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে গঠিত কমিটির রিপোর্টেও তিনি অভিযুক্ত। আর এর পরেই বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠালেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। এ দিন তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ই মেল মারফত পদত্যাগপত্রটি পাঠিয়েছেন। তবে এখনও সেটি গ্রহণ করা হয়নি। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্রের হার্ড কপি চেয়ে পাঠাতে পারে বলে খবর। চাপের মুখে কোনও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন, এমন নজির অবশ্য নেই। মন্ত্রক যদি তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তা হলে প্রথম বার এমনটি হবে।
এ দিন অবশ্য সাংবাদিকদের সে ভাবে কিছু খুলে জানাতে চাননি সুশান্তবাবু। তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
কেন তাঁর এই সিদ্ধান্ত? উপাচার্য বলেন, ‘‘বরাবরই মনে করি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করি সেখানে সম্পূর্ণ কাজ করা উচিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর হয়ে গিয়েছে। আমার আর এক বছর মেয়াদ রয়েছে। এমনটা চলতে থাকলে আমার পক্ষে কাজ করা অসম্ভব।’’ তবে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের বাধাতেই তাঁর কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘সেটা স্পষ্ট।’’
গত বছর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগ, তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে নিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেনশন নিচ্ছিলেন। যা বেআইনি। এমনকী প্রভাব খাটিয়ে বিশ্বভারতীর কয়েকটি পদে তিনি নিয়োগ করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। রাজ্য সভার অধিবেশনে কংগ্রেস সরব হওয়ার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। বিষয়টি নিয়ে তাঁর জবাবও চায় মন্ত্রক। উপাচার্যের জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি সেই কমিটি। এর পরেই গত সপ্তাহে তাঁকে অভিযুক্ত করে কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে একটি রিপোর্ট পাঠায়। সরকারি ভাবে এখনও সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্ত্রক। তার আগেই তড়িঘড়ি উপাচার্যের এই সিদ্ধান্ত।