বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
রবীন্দ্রজয়ন্তীতে পর্যটকদের জন্য বন্ধই থাকল বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবন। গরমের যুক্তি দেখিয়ে বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও সংক্ষেপে সারা হল মঙ্গলবার। এ দিনই বিশেষ উপাসনা থেকে নানা বিষয়ে সরব হলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
প্রথা মেনে এ দিন ভোরে বৈতালিক, কবিকণ্ঠ, মন্দিরে বিশেষ উপাসনা ও পুষ্পপ্রদান অনুষ্ঠান হয়নি মাধবীবিতানে কবিগুরুর জন্মোৎসব পালনের অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় গৌরপ্রাঙ্গণের নৃত্যনাট্যের অনুষ্ঠান। রবীন্দ্রভবনের ভিতরে থাকা উদয়ন বাড়িতে কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হলেও সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না রবীন্দ্রভবনে। হতাশ হয়েছেন শান্তিনিকেতনে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। রবীন্দ্রভবন বন্ধের পিছনে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’র কারণ দেখিয়েছে বিশ্বভারতী। সেই কারণ অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন বলে মনে করছেন অনেকেই। অনুষ্ঠান কাটছাঁটের জন্য অতিরিক্ত গরমের কারণ দেখানো হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে। এ দিন বিশেষ উপাসনা থেকে উপাচার্যও বলেন, “দু’দিন ধরে তাপমাত্রা প্রবল ভাবে বেড়েছে, রোদ উঠলে বাইরে থাকা যাচ্ছে না। রবীন্দ্রজন্মোৎসবের যে অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, তা এ বার আমরা করতে পারছি না।’’
উপাচার্য বলেন, “বিভিন্ন রকম ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেও বিশ্বভারতী বিশ্বভারতীতেই আছে। পরিবর্তন হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ সব সময় বলতেন, ‘১০০ বছর বাদে কেউ যদি আমার ভাবনাচিন্তার অনুরণন করেন সেটা সমীচীন হবে না’। অর্থাৎ যাঁরা নিজেদের মনে করেন রবীন্দ্রনাথের ভাবনাচিন্তা থেকে একটু বিচ্যুত হলে রে রে করব, সেটা রবীন্দ্রনাথও চাইতেন না। রবীন্দ্রনাথের ভাবনাচিন্তার অনুরণন মানে এই নয় যে তিনি যা বলেছেন, সেটাকেই আমরা অনুকরণ করব।’’
প্রবীণ আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘সকালে গরম থাকতে পারে, রাতের অনুষ্ঠান হল না কেন!’’ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে উপাচার্যের ‘বোধ’ এখনও আসেনি বলেও তিনি কটাক্ষ করেছেন। অন্য দিকে, কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, গান, কবিতা ছবি আঁকার মধ্য দিয়ে অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সামনে ধর্নামঞ্চে পালিত হয়েছে রবীন্দ্রজয়ন্তী। তাতে আশ্রমিক, রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষ, তৃণমূলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে যোগ দিয়েছিলেন স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা।