কলাভবনের নির্যাতিতা ছাত্রী অবস্থানে বসে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার পরিবারের দাবি মেনে নিল বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীর বাবাকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ জানাল, নির্যাতিতার চিকিৎসার খরচ বহন করা হবে। অন্যান্য খরচ মেটানোর কথাও বিবেচনা করা হবে। ওই ছাত্রীর বাবাকে যে তাঁর দাবি নিয়ে বারবার আসতে হয়েছে, সে জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত বছর অগস্টে কলাভবনের তিন সিনিয়রের বিরুদ্ধে নির্যাতন, মারধরের অভিযোগ আনেন ভিনরাজ্যের ওই ছাত্রী। তার বাবা তখন অভিযোগ করেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁদের চাপ দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শেষ অবধি বাড়ি ফিরে যেতে হয় ওই ছাত্রীকে। তারপর থেকেই বারবার অসুস্থ হয় সে। সম্প্রতি মেয়ের জন্য ন্যায় দাবি করে ওই ছাত্রীর বাবা-মা ১২ ঘণ্টা অনশনে বসেন বিশ্বভারতী চত্বরে। বিশ্বভারতী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর মেয়ের নাম প্রকাশের প্রতিবাদ করে, তার প্রতিকারও চান তাঁরা। চিকিৎসার খরচ-সহ তাঁদের দাবিগুলি পূরণ না হলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন ছাত্রীর বাবা। তাঁদের দাবির সমর্থনে পড়ুয়ারা মিছিল করে। বুধবার নির্যাতিতাও অবস্থানে বসে, এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ দিন আলোচনায় বসেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপিকা তপতী মুখোপাধ্যায়, প্রোভোস্ট, অধিকর্তা সবুজকলি সেন এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা। সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা জানান, যে দাবিগুলি বিশ্বভারতীর এক্তিয়ারভূক্ত, তা সবই মেনে নেওয়া হচ্ছে। সেই সময়ে ঘটনার তদন্ত যাঁরা করেছেন, প্রয়োজনে তাঁদের ভূমিকা ফের খতিয়ে দেখা হবে, এমন আশ্বাসও দেওয়া হয়। ছাত্রীর বাবার দাবি মেনে বলা হয়, কলাভবনের তৎকালীন অধ্যক্ষ শিশির সাহানাকে সতর্ক করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে তিনি এ ধরনের ঘটনা সহানুভূতির সঙ্গে দেখেন। উত্তরপূর্বাঞ্চলের ছাত্রদের জন্য পৃথক সেল খোলার দাবিও মানা হয়। ওই ছাত্রী ফের যোগ দিলে তার সব ফি মকুব করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত ছাত্রদের দু’জনকে ফের ভর্তি করায় ছাত্রীর পরিবার যে আপত্তি তুলেছিল, উত্তরে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতেও তাই হবে। নির্যাতিতার বাবা দ্রুত দাবি পূরণের আর্জি রেখেছেন।