ফাইল চিত্র।
কেউ মারা গিয়েছেন। কেউ বা জেলবন্দি। অথচ তাঁদের নামেই ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ জারি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এখানেই শেষ নয়। মৃত বা জেলবন্দিরা ১০০ দিনের কাজে মজুরিও পেয়েছেন! এমনকি, গ্রামের পাকা বাড়ির বাসিন্দাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। স্থানীয় বিডিও থেকে জেলাশাসক, সবাইকে এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে কাজ না হওয়ায়, শেষমেশ কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার ব্লকের কুমারগ্রাম পঞ্চায়েতের এক দল বাসিন্দা।
সোমবার সেই ঘটনায় জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ। কোর্টের নির্দেশ, তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে হবে। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় জড়িত সব পক্ষের বক্তব্য জেলাশাসক যাতে নথিবদ্ধ করেন, তারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
নন্দকুমার ব্লকের কুমারগ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অমিতকুমার দাস-সহ কয়েক জন আদালতে মামলা করে জানিয়েছেন, তাঁদের পঞ্চায়েতে বহু অনিয়ম চলছে। তার মধ্যে সব থেকে বেশি গরমিল রয়েছে ১০০ দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা বণ্টনে। কোন মৃত বাসিন্দার জব কার্ডে ১০০ দিনের কাজ দেওয়া হয়েছে এবং পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কে কে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন, তারও তথ্য আদালতে পেশ করেছেন মামলাকারীদের আইনজীবী অতরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুভাষ জানা। মামলার আবেদনে আরও বলা
হয়েছে, পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের স্বামীকে নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে পঞ্চায়েতের সুপারভাইজ়র পদেও নিয়োগ করা হয়েছে।
মামলাকারীদের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, দুটি সরকারি প্রকল্পের অনিয়ম নিয়ে তাঁরা বারবার নন্দকুমার ব্লকের বিডিওকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু একাধিক বার জানানো সত্ত্বেও বিডিও এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ। পরবর্তী কালে মহকুমাশাসক এবং জেলাশাসককেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁরাও কোনও পদক্ষেপ করেননি। অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও জেলাশাসকের পদক্ষেপ না-করার বিষয়টি আদালত নথিবদ্ধ করেছে বলেও খবর।
প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, স্থানীয় সরকারি আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্রয় ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না। আদালতের নির্দেশ, জেলাশাসককে যথাযথ
তদন্ত করতে হলে সরকারি আধিকারিকদের ভূমিকাও সামনে আনা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের টাকা এ ভাবে নয়ছয় করার অভিযোগ সত্য প্রমাণ হলে বিষয়টি ভিন্ন গুরুত্ব পেতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।