পুরুলিয়া ২ ব্লকের কোলবাঁধ গ্রামে দেওয়াল লিখন। ছবি: সুজিত মাহাতো।
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি হচ্ছে। তার আগেও পুরুলিয়ার গ্রামের ঘরে ঘরে পৌঁছনোর দাবি করেছে প্রশাসন। কিন্তু অনুন্নয়নের অভিযোগ ওঠা বন্ধ হচ্ছে না। সে অভিযোগে গ্রামে সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি কার্যত বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুরুলিয়া-২ ব্লকের কোলবাঁধ গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। শনিবার সে ব্যাপারে হয়েছে বিক্ষোভ-মিছিলও। জেলা সভাধিপতি তৃণমূলের সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্ষোভের কারণ জানতে গ্রামে যাব।’’
ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া কোলবাঁধে থাকে কম-বেশি ৪০০ পরিবার। গ্রামবাসী বিমল মাহাতো, সমরচন্দ্র মাহাতোরা জানাচ্ছেন, স্থানীয় জলেশ্বর শিবমন্দির মোড় থেকে গ্রাম পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা। সে জন্য ভোগান্তির অন্ত নেই। গ্রামে সরকারি নলকূপ গোটা সাতেক। বেশির ভাগ অকেজো থাকায় বহু দূর থেকে জল আনতে হয়। হাতেগোনা কয়েক জন আবাস যোজনার সুবিধা পেয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে পর্যাপ্ত কাজ মেলেনি বলে অভিযোগ। তাঁদের আর এক ক্ষোভ, ৩ বছর ধরে গ্রামে জুনিয়র হাইস্কুলের নির্মাণ আটকে রয়েছে।
গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, ‘গণদাবি’ শিরোনামে লাল কালিতে দেওয়ালে ন’দফা দাবি লেখা হয়েছে। সঙ্গে বার্তা—কেন্দ্র ও রাজ্যের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি থেকে কেন গ্রাম বঞ্চিত, যত ক্ষণ না সে উত্তর মিলছে, কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি করা চলবে না। সব দলের প্রচারে বাধা কেন? বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘‘ভোটের আগে সবাই নানা কথা বলে। ভোট মিটলে কারও দেখা মেলে না। তাই কারও প্রচারই চাইছি না।’’
যদিও সংশ্লিষ্ট ঘোঙা পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের রীতা কালিন্দীর দাবি, ‘‘খবর পেলেই নলকূপ সারানো হয়। সুযোগ অনুযায়ী, একশো দিনের কাজও দেওয়া হয়। রাস্তার বিষয়টি ব্লকের আওতাধীন। কোনও কাজ হয়নি, এটা ঠিক নয়।’’ লোকসভার নিরিখে গ্রামে সামান্য এগিয়ে থাকা বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী কথায়, ‘‘স্থানীয় স্তরে রাজ্যের সহায়তা ছাড়া, কেন্দ্রের পক্ষেও কিছু করা মুশকিল।’’ জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ রায়ের বক্তব্য, ‘‘ন্যূনতম চাহিদাগুলিও যদি না মেটে, ক্ষোভ হবেই। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানো উচিত।’’ বিডিও (পুরুলিয়া-২) বিজয় গিরির দাবি, ‘‘ ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী, ওখানে ১৪ জনের আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়ার কথা। তাঁরা পেয়েছেন। ওঁদের সমস্যার কথা শুনতে প্রশাসনের দরজা সব সময় খোলা।’’