—ফাইল চিত্র
তার মোবাইলে বেঙ্গালুরুতে থানা, পুলিশের গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি আর ভিডিয়ো তো ছিলই। লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সৈয়দ ইদ্রিস নবি সাব ওরফে মুন্নার একটি মোবাইল থেকে এ বার উদ্ধার করা হল জাল ভারতীয় নোট পাচারের সবিস্তার ভিডিয়ো।
গ্রেফতারের পরেই মুন্নার মোবাইল থেকে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। তাকে জেরার পরে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে লস্কর গোটা দেশে নতুন করে জাল নোট পাচারের ছক কষেছে। জঙ্গি চক্রের মাধ্যমে জাল নোট পাচার নতুন নয়। কর্নাটকে ধৃত মুন্না আর কী কী চক্রান্ত করছিল, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন এনআইএ-র তদন্তকারীরা।
গত সপ্তাহে কর্নাটকের সিরসিতে মুন্নাকে গ্রেফতার করে ট্রানজ়িট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হয়। তাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচার ভবনের বিচারক। মঙ্গলবার তাকে ফের বিচার ভবনে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে তোলা হয়। সেখানে এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানান, ধৃতের মোবাইল থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে আট দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এনআইএ জানিয়েছে, মুন্না মূলত যুবকদের মগজ ধোলাই করে জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগের ব্যবস্থা করত। সে ক’জনকে জেহাদি সংগঠনে এনেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে। শতাধিক পাকিস্তানি ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে তার মোবাইলে। সেই সব নম্বরের সাহায্যে বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মধ্যে যোগাযোগ রাখত মুন্না। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বেশির ভাগ পাকিস্তানি নম্বরই আইএসআই এজেন্টদের। তাদের মাধ্যমে নির্দেশ আসত মুন্না-সহ এখানকার জঙ্গিদের কাছে। ধৃতের মোবাইলে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বেশ কিছু নম্বরও মিলেছে। তাকে জেরা করে ওই সব নম্বর সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে।
মুন্না জানিয়েছে, দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তাদের লোকজন রয়েছে। তার নিয়োগ করা যুবকেরা চার বছর কর্নাটক ছাড়াও দক্ষিণের বিভিন্ন রাজ্যের ছোট শহরগুলিতে জঙ্গি কাজকর্মে যুক্ত। কোথায় কোথায় তারা কোন কাজে কী ভাবে যুক্ত, তা জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা। মুন্নার মোবাইল থেকে মুছে দেওয়া বিভিন্ন নথি উদ্ধার করতে ফরেন্সিক সাইবার ল্যাবের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আশা, ওই নথি উদ্ধার করতে পারলে গোটা দেশে পাকিস্তানের মদতে জঙ্গি জালের চাঁইদের হদিস মিলবে।