Jadavpur University Incident

অচলাবস্থা কাটাতে যাদবপুরের পড়ুয়াদের ইমেল উপাচার্যের, ‘স্যর’কে দেখতে হাসপাতালে ছাত্রছাত্রীরা, ‘বরফ’ কি গলছে?

গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ক্লাস বয়কট। বিক্ষোভকারীদের দাবি, উপাচার্যকে দেখা করতে হবে তাঁদের সঙ্গে। যদিও অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ভাস্কর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৫ ২০:০৮
Share:
Vice-Chancellor of Jadavpur University emailed all the students to break the deadlock

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন পড়ুয়ারা। সঙ্গে ছিলেন সে দিনের ঘটনায় আহত পড়ুয়া অভিনব বসুও (কালো টি-শার্ট)। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবার থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বয়কটের ডাক দিয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। শুধু তা-ই নয়, অনেকেই পরীক্ষায় না-বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা কাটাতে এ বার ছাত্রছাত্রীদের অনুরোধ করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। হাসপাতাল থেকে ইমেল করে সকলের উদ্দেশে বার্তা পাঠালেন তিনি। তাঁর অনুরোধ, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু গণতন্ত্র বজায় রাখার আর্জিও জানিয়েছেন ভাস্কর।

Advertisement

গত ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বেশ কয়েক জন পড়ুয়া তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখান। দাবি, অবিলম্বে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করাতে হবে। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের ‘হামলা’য় ভেঙেছে ব্রাত্যের গাড়ির কাচ। এমনকি, আহতও হন শিক্ষামন্ত্রী। শুধু ব্রাত্য নন, অধ্যাপক তথা তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সদস্য ওমপ্রকাশ-সহ আরও কয়েক জন আক্রান্ত হন। অন্য দিকে, বামেদের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের অভিযোগ, ব্রাত্যের গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন পড়ুয়ারা। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ১ মার্চ থেকে রাস্তায় নেমেছেন পড়ুয়াদের একাংশ।

গত সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ক্লাস বয়কট। বিক্ষোভকারীদের দাবি, উপাচার্যকে দেখা করতে হবে তাঁদের সঙ্গে। কথা বলতে হবে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে। যদিও অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ভাস্কর। তাই সশরীরে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তিনি। এই অবস্থায় হাসপাতাল থেকেই ক্যাম্পাসের অচলাবস্থা কাটাতে পড়ুয়াদের অনুরোধ করলেন উপাচার্য। প্রশাসনিক এবং গবেষণার কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালানোর আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পড়ুয়াদের প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল, চিঠিতে সেই কথাও উল্লেখ করেছেন উপাচার্য। একই সঙ্গে ১ মার্চের ঘটনা ‘দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে পড়ুয়াদের অনুরোধ করেছে যাদবপুরের অধ্যাপক সংগঠনগুলিও। পরিস্থিতির উপর বিচার করে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার কথা জানাল শিক্ষক সংগঠন জুটাও। ছাত্রদের কাছে তারা লিখিত আবেদনও করেছে এই বিষয়ে।

Advertisement

যাদবপুরকাণ্ডের দিন দুয়েক পরেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অসুস্থ ভাস্করকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। শুক্রবার থেকে নতুন করে আর রক্তচাপ ওঠানামা করেনি। শরীরে জলাভাবের (ডিহাইড্রেশন) মাত্রা অনেকটা কম।

অন্য দিকে, অসুস্থ পড়ুয়া ইন্দ্রানুজ রায়ের শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল। শনিবার চিকিৎসকেরা তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার অনুমতি দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, সোমবারই তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর শনিবারই অসুস্থ উপাচার্যকে দেখতে যান যাদবপুরকাণ্ডের আর এক অসুস্থ ছাত্র অভিনব বসু। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েক জন পড়ুয়া। শনিবারের ঘটনার পরই পড়ুয়াদের একাংশের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন উপাচার্য। তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ছাত্রেরা। কিন্তু গত তিন- চার দিনে ছবি কিছুটা বদলেছে। অসুস্থ উপাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ইন্দ্রানুজের বাবা। ইন্দ্রানুজের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবেন বলেও তাঁকে জানিয়েছিলেন উপাচার্য। এমনকি, ইন্দ্রানুজের বাবার সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছিল ব্রাত্যের। তার পর শনিবার উপাচার্যকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন সে দিনে ঘটনায় আহত পড়ুয়া। পর পর ঘটনাবলি দেখে অনেকেই মনে করছেন, গত ১ মার্চের ঘটনার পর যে টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল, তা অনেকাংশে কেটেছে।

অন্য দিকে, যাদবপুরকাণ্ডের তদন্তে শনিবার অধ্যাপক ওমপ্রকাশের বাড়িতে যায় পুলিশ। সূত্রের খবর, তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। এই বিষয়ে ওমপ্রকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি সেই দিন থানায় গিয়েছিলাম। ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ দায়ের করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি। আজ পুলিশ এসে আমার বয়ান নথিভুক্ত করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement