—ফাইল চিত্র।
উপাচার্যের সঙ্গে টানাপড়েনের জেরে অবস্থানে বসেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য গৌতম পাল। শুক্রবার বিকেলেই তাঁকে জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (জেএনএম) ভর্তি করানো হয়। এই অবস্থায় নদিয়ার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা তো নেই-ই, উল্টে সোমবার থেকে তা আরও জটিল হতে পারে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষের সঙ্গে সহ-উপাচার্য গৌতম পালের সংঘাত আগে থেকেই চলছিল। তা তুঙ্গে ওঠে গত ১৭ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায়কে উপাচার্য সরিয়ে দেওয়ার পরে। একটি অলিখিত নালিশের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে সত্য অনুসন্ধান কমিটিও গড়া হয়েছে। এই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীদের একটা বড় অংশ। এরই মধ্যে গত সোমবার পাল্টা নির্দেশ দিয়ে রেজিস্ট্রারকে তাঁর পদে পুনর্বহাল করেন সহ-উপাচার্য। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপাচার্য তাঁর কাছে লিখিত কৈফিয়ত চেয়েছেন।
শুক্রবার সকালে সহ-উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে উপাচার্যের সচিবালয়ের একটি ঘরে আধিকারিকদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সচিবালয়ের তরফে তাঁকে ওই ঘরে বসতে দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে হইচই শুরু হলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন উপাচার্য। আর তাঁর সামনেই করিডরে বসে পড়েন সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার-সহ বেশ কিছু আধিকারিক। একাধিক পক্ষ গিয়ে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। দুপুরে উপাচার্য দাবি করেন, ‘‘সব নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছি। এতে যাঁদের কায়েমি স্বার্থে আঘাত লাগছে, তাঁরা আন্দোলন করছেন। আইন ছাড়া কারও কাছে মাথা নত করার প্রশ্নই ওঠে না।’’ সহ-উপাচার্যকে ‘মিটিং রুম’-এ বসতে বলেছিলেন বলেও তিনি দাবি করেন। বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন সহ-উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকেরা তাঁকে স্ট্রেচারে শুইয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা করে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। চিকিৎসক শান্তিরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘স্যর সকাল থেকে কিছু খাননি। শরীর দুর্বল। রক্তচাপ ওঠানামা করছে। তাই হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে।’’ জেএনএম সূত্রের খবর, রাত পর্যন্ত অক্সিজেন চলেছে। অবস্থা মোটের উপরে স্থিতিশীল।
তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র নেতা নন্দকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে আটকে রাখা যায় না। উচ্চশিক্ষা দফতর-সহ সব জায়গায় জানানো শুরু করেছি।’’