(বাঁ দিকে) আচার্য সিভি আনন্দ বোস এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। সোমবার রাতে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক হয় দু’জনের। মূলত, যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ইউজিসির রিপোর্ট এবং মঙ্গলবারের কর্মসমিতির বৈঠকের বিষয়ে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে বলে জানান বুদ্ধদেব।
মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসমিতি (ইসি)-র বৈঠক রয়েছে। শেষ এই বৈঠক হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। এই বৈঠকের আগেই ছাত্রদের দাবিতে একটি স্টেকহোল্ডারদের বৈঠকও রয়েছে। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাজভবন থেকে বেরিয়ে উপাচার্য বলেন, “বাজেট, ক্যাম্পাস চত্বরে নিরাপত্তা এবং প্রতি বর্ষের ছাত্রদের আলাদা আলাদা হস্টেলে রাখা এই সব নিয়ে কাল ইসিতে আলোচনা করা হবে। যে সব বিষয়ে আলোচনা করার আছে তাতে ৮-১০ ঘণ্টার মিটিংয়েও শেষ হবে না। কিন্তু ২-৩ ঘণ্টার পরেই সদস্যরা বিরক্ত হয়ে যান। ধৈর্য রাখতে পারেন না। দরকার পড়লে পরে আরও একটি বৈঠক ডাকা হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইউজিসি রিপোর্টে আমাদের বেশ কিছু খামতি ধরা পড়েছে সেই খামতিগুলি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। রাজ্যপালও দ্রুত সেই সব বিষয় মিটিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন।”
প্রথম বর্ষের ছাত্রদের আলাদা হস্টেলে রাখার বিষয়ে বুদ্ধদেব বলেন, “ইতিমধ্যেই কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইঞ্জিনায়ারিংয়ের জন্য এখনও পুরো ব্যবস্থা করা যায়নি। সিনিয়রদের হস্টেল ছেড়ে অন্য ব্লকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে ১৫ জন ছাত্র লিখিত চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল তারা ভয় পাচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, প্রতি বর্ষের ছাত্রদের জন্য আলাদা আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করা গেলে খুবই ভাল হবে। রাজ্যপালও এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে বলেছেন। এই বিষয়টি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে বলে জানান বু্দ্ধদেব। রাজ্যপাল অন্তবর্তী র্যাুগিং কমিটির ভিত্তিতে ইউজিসি থেকে আসা রিপোর্ট নিয়ে চিন্তিত। ইউজিসি যে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে তার মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সিসিটিভি ইনস্টলেশনের কাজ নিয়েও খোঁজ নেন রাজ্যপাল।
ছাত্রমৃত্যুর রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি উঠছে বহু দিন ধরে। ছাত্রমৃত্যুতে তৈরি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির তদন্তের এক্তিয়ার আদৌ ছিল কি না, তা নিয়েই সম্প্রতি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বুদ্ধদেব জানিয়েছেন, ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী র্যা গিংয়ের তদন্তের এক্তিয়ার রয়েছে অ্যান্টি র্যাংগিং স্কোয়াডের। স্কোয়াডকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। তাই ওই রিপোর্ট কর্মসমিতির আসন্ন বৈঠকে পেশ করা হবে না।
ছাত্রমৃত্যুতে জড়িতদের শাস্তি মকুব করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল বুদ্ধদেবের বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “এ সবই অপপ্রচার। ইউজিসির নির্দেশিকা মেনে তদন্ত হওয়া উচিত। আগের উপাচার্যের সময় পুরো অ্যান্টি র্যা গিং স্কোয়াড ছিল না। তাই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অ্যান্টি র্যাগগিং কমিটির রিপোর্ট অ্যান্টি র্যা গিং স্কোয়াডের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ বার তারা যদি মনে করে আরও তদন্ত দরকার তারা করবে। সেই তদন্তের রিপোর্ট দেখে অভ্যন্তরীণ কমিটি পদক্ষেপ করবে। সুতরাং কেউ যদি বলে থাকেন আমি তদন্ত প্রভাবিত করছি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”