মিটেছে ভোট, কিন্তু মারপিট চলছেই রাজ্যে

পুরভোট মেটা ইস্তক ছোট-বড় গোলমাল লেগেই রয়েছে রাজ্য জুড়ে। তার মধ্যে গুলি করা থেকে বোমা বাঁধা সবই রয়েছে। চলছে হুমকি দেওয়াও। মালদহের ইংরেজবাজারে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে মারার চেষ্টা করা হয়। অভিযোগের তির সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রায়পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবকের নাম পিন্টু মণ্ডল, পেশায় রাজমিস্ত্রি। রাতে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বুধবার ভোরে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধও করেছে তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১১
Share:

পুরভোট মেটা ইস্তক ছোট-বড় গোলমাল লেগেই রয়েছে রাজ্য জুড়ে। তার মধ্যে গুলি করা থেকে বোমা বাঁধা সবই রয়েছে। চলছে হুমকি দেওয়াও।

Advertisement

মালদহের ইংরেজবাজারে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে মারার চেষ্টা করা হয়। অভিযোগের তির সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রায়পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। আহত যুবকের নাম পিন্টু মণ্ডল, পেশায় রাজমিস্ত্রি। রাতে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বুধবার ভোরে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে মালদহ-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধও করেছে তৃণমূল।

ইংরেজবাজারের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী দোলন চাকি মাত্র তিন ভোটের ব্যবধানে তৃণমূলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন। মঙ্গলবার ভো‌টের ফল বেরনোর পরে বিজয় মিছিল বের করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, সেই সময়েই সিপিএমের লোকজনের সঙ্গে পিন্টুর বচসা হয়েছিল। রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর বুকে গুলি করে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা। পিন্টুর বাবা রামপদ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘দোলন চাকির নির্দেশে তার দলবল এই কাজ করেছে।’’ দোলনবাবু অবশ্য় দাবি করেন, ‘‘বিজয় মিছিলে কিছুই হয়নি। চক্রান্ত করে আমায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’

Advertisement

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল জুড়ে সন্ত্রাস চালানোয় আবার অভিযুক্ত তৃণমূল। ভাটপাড়ার বিধায়ক যে অর্জুন সিংহ নির্বাচনের আগে থেকে দাবি করেছেন বিরোধীরা আক্রান্ত হলে তিনি পাশে দাঁড়াবেন, হামলার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ফল প্রকাশের পরেই ভাটপাড়ার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী গোপাল সাহা ও ৩৩ ‌নম্বরের নির্দল প্রার্থী বুলবুল সরকারের বাড়িতে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। অর্জুনবাবুর দাবি, ‘‘এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। আমরাই তো পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ ভাটপাড়ার পাশে নৈহাটি, হালিশহর, টিটাগড় ও গারুলিয়াতেও সিপিএম, কংগ্রেস ও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীরা হামলার অভিযোগ তুলেছেন।

হুগলির শ্রীরামপুরে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম সমর্থকদের হুমকি দেওয়া এবং ক্লাবে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রভাসনগরে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের ইট ছোড়াছুড়ি, মারামারি হয়। পুলিশ গিয়ে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। উত্তরপাড়া-কোতরং পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতে সিপিএমের লোকজন আবার তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী সন্দীপ রায়কে মারধর করে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে এলাকায় মিছিল করে তৃণমূল। সিপিএম অবশ্য দাবি করছে, তৃণমূলই হারের হতাশা থেকে সন্ত্রাস চালিয়েছে। বাড়ি বাড়ি হুমকি দিচ্ছে।

সন্ত্রাস যে এখানেই থামবে না, তার ইঙ্গিতও রয়েছে চাঁপদানির একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায়। মঙ্গলবার রাতে চাঁপদানির ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নুরি লেনে একটি একতলা বাড়ির ছাদে বোমা ফেটে মহম্মদ পারভেজ (২৫) নামে এক জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বাড়ির বাসিন্দাদের তিন জন। প্রাথমিক তদন্তের পুলিশের অনুমান, ছাদে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। কোনও ভাবে তা ফেটে যায়। বাড়িটি ওই ওয়ার্ডে হারা তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ নাসিমের। দলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীর কাছে হেরে বদলা নিতে তিনি বোমা বাঁধাচ্ছিলেন বলে বিরোধী তথা স্থানীয়দের একাংশের অনুমান।

কলকাতার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের কার্যালয় দখল করে মার্কস, লেনিন, জ্যোতি বসুর ছবি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেখানে তৃণমূল নেত্রীর কাট-আউট ও দলের পতাকা-ফেস্টুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের জামবনিতেও কৃষক সভার একটি পুরনো কার্যালয় দখল করেছে তৃণমূল। তবে ইদানীং সেটি ব্যবহার করা হচ্ছিল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement