থানায় হুজ্জুতি, অভিযুক্তদের ছাড়াল তৃণমূল

সেই ‘ছোট ছেলে’-র তত্ত্ব। সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ট্র্যা়ডিশন! এ বার বাঁকুড়ায়। গভীর রাতে বাঁকুড়া সদর থানায় ঢুকে হুজ্জুতি বাধাল একদল যুবক। আর শাসকদলের ‘চাপে’ অভিযুক্তদের দু’জনকে আটক করেও ছেড়ে দিতে বাধ্য হল পুলিশ। বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুর এলাকায় গত শুক্রবার থেকে হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে মেলা চলছে। মঞ্চ গড়ে নানা অনুষ্ঠানও হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০৪:০০
Share:

বাঁকুড়া থানায় বিক্ষোভকারী হামলায় ভাঙা চেয়ার।

সেই ‘ছোট ছেলে’-র তত্ত্ব। সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ট্র্যা়ডিশন! এ বার বাঁকুড়ায়। গভীর রাতে বাঁকুড়া সদর থানায় ঢুকে হুজ্জুতি বাধাল একদল যুবক। আর শাসকদলের ‘চাপে’ অভিযুক্তদের দু’জনকে আটক করেও ছেড়ে দিতে বাধ্য হল পুলিশ।

Advertisement

বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুর এলাকায় গত শুক্রবার থেকে হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে মেলা চলছে। মঞ্চ গড়ে নানা অনুষ্ঠানও হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তারস্বরে সাউন্ড-বক্স বাজিয়ে মেয়েদের নাচ চলছিল ওই মঞ্চে। বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে সাউন্ড-বক্স চালানোর যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করে। তাতেই এলাকাবাসীর একাংশ থানায় গিয়ে বিক্ষোভ জুড়ে দেন। মদের বোতল হাতেও দেখা গিয়েছে একাধিক যুবককে। থানায় ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ অবশ্য বিক্ষোভকারীদের দাবি মানেনি। তারা দুই যুবককে লক-আপে আটকে রাখে।

গোপীনাথপুর বাঁকুড়া পুরসভার ১ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ওই দুই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবাশিস লাহা ও অনন্যা চক্রবর্তী-সহ শহরের কিছু তৃণমূল নেতা থানায় হাজির হন। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কাউন্সিলরেরা আটক যুবকদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে পুলিশের উপরে চাপ দেন। এমনকী, ফোন করে জেলা তৃণমূলের নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীকে থানায় আসতে বলেন। রাত ১২টা নাগাদ অরূপবাবু থানায় গিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন। আলোচনা শেষে পুলিশ আটক যুবকদের ছেড়ে দেয়। বাজেয়াপ্ত করা যন্ত্রটি অবশ্য পুলিশ ছাড়েনি। যদিও কাউকে আটক করা হয়েছিল বলে পরে মানেনি পুলিশ।

Advertisement

সাম্প্রতিক কালে একের পর এক ঘটনায় পুলিশের উপরে হামলায় নাম জড়িয়েছে শাসক দলের। বোলপুর থেকে আলিপুর, চাঁপদানি থেকে বাঁকুড়া—তারই প্রমাণ। বিরোধীদের বক্তব্য, তার পরেও তৃণমূল নেত্রী যে ভাবে কখনও ‘ছোট’ বা ‘দুষ্টু’ ছেলেদের কাজ বলে দিচ্ছেন, তার পরে পুলিশের কার্যত কিছু করার থাকছে না। একেবারে দলনেত্রীর সুরেই অনন্যাদেবী ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ছোট ছেলেরা ভুল করে ফেলেছে। ওরা ইমম্যাচিওর।’’ আর সভাধিপতির দাবি, ‘‘থানায় কেউ বিক্ষোভ দেখায়নি, ভাঙচুরও হয়নি। এমন হলে পুলিশ নিশ্চয় অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করত।’’

তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য ঘটনাটিকে ভাল চোখে দেখছেন না। জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁকে ফোন করে তাঁর জবাবদিহি চেয়েছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভর্ৎসনা করা হয় সভাধিপতি অরূপবাবুকেও। দলের যে নেতা-কর্মীরা ঘটনায় জড়িত, তঁদের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement