শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যসচিব পদ থেকে সদ্য অবসর নেওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা করা হয়েছে হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। তাঁর থাকার জন্য পার্ক সার্কাসের কাছে সরকারি বাংলো সংস্কার করা নিয়ে এ বার বিতর্ক দানা বাঁধল। ওই সরকারি বাসভবন থেকে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও দুই বিধায়ককে অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। এ সবের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ‘পছন্দে’র আমলার জন্য বিপুল টাকা খরচ করে বাংলো সাজানো হচ্ছে এবং মন্ত্রী-বিধায়কদের উঠে যেতে বলা হচ্ছে! অতীতে মুখ্যসচিব থাকাকালীন দ্বিবেদীর বাড়ি ভাড়া বাবদ সরকারি ভাতা নেওয়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা।
গত ৩১ ডিসেম্বর কর্মজীবনের বর্ধিত মেয়াদ (এক্সটেনশন) শেষে অবসর নিয়েছেন দ্বিবেদী। নতুন মুখ্যসচিব হয়েছেন ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা। রীতি অনুযায়ী, মুখ্যসচিবের জন্য নির্ধারিত বাসভবনে আর থাকতে পারবেন না প্রাক্তন মুখ্যসচিব। অথচ অবসরের পরে তাঁকে মুখ্যমুন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পদে ফের নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। শুভেন্দুর অভিযোগ, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ে প্রাক্তন মুখ্যসচিবের থাকার জন্য ৮টি শয়নকক্ষ বিশিষ্ট ৭ হাজার বর্গফুটের বাসভবন সংস্কার এবং নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলতে দু’কোটি টাকা খরচ করছে রাজ্য সরকার। শুভেন্দুর আরও অভিযোগ, এই ব্যবস্থা করার জন্য বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান, সেচ ও জল পরিবহণ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লাকে ওই বাড়ি ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। এই ঘটনাকে নিয়ে শাসক দল তৃণমূলের উদ্দেশে কটাক্ষও ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে যে পদক্ষেপের কথা বলে তৃণমূল, বাস্তবের সঙ্গে তার মিল নেই।
ওই বাংলোর বর্তমান বাসিন্দা এক মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়ি অন্য প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার হবে। তাই আমাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।’’ দুই মন্ত্রী আখরুজ্জামান ও সাবিনা আলিপুরে মন্ত্রীদের আবাসনে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়িতে ঘর ছিল প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষেরও। সূত্রের খবর, গিয়াসউদ্দিন ও রবীন্দ্রনাথকেও ঘর ছেড়ে দেওয়ার বার্তা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের এক মন্ত্রী মারফত।
সরকারি ভাবে এই নিয়ে অবশ্য কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে পূর্ত দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বাড়ি সংস্কারে যে অঙ্কের খরচের কথা দাবি করা হচ্ছে, তা বাস্তবের সঙ্গে মিল নেই। শুধু সংস্কার বা সাজানোর কারণে এত অর্থ খরচ হয় না।