বিজেপির কর্মী খুন ঘিরে উত্তপ্ত আমডাঙা

পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের আমডাঙার এই বইচগাছি এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু মিছিল চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

নাজিবুর করিম

এক যুবককে পিটিয়ে খুনকে কেন্দ্র করে শনিবার ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙা। পুলিশ সূত্রের খবর, নিহতের নাম নাজিবুর করিম (৩৮) ওরফে আকবর। বাড়ি স্থানীয় বইচগাছির দক্ষিণপাড়ায়। বিজেপির দাবি, তাদের কর্মী নাজিবুরকে তৃণমূল খুন করেছে। এই অভিযোগে এ দিন পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে জনতা। পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দেয়। রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে, এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের আমডাঙার এই বইচগাছি এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু মিছিল চলছে। বিকেলে ওই এলাকায় গিয়ে ব্যারাকপুরের বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল খুনখারাপি করছে। এর পরে আমডাঙায় পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। নন্দীগ্রামের মতো আন্দোলন চলবে এই এলাকায়।’’ আমডাঙার পরিস্থিতি দেখতে রাজ্যপালকে আসার অনুরোধ করবেন বলেও তিনি জানান। যদিও আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘এ কোনও রাজনৈতিক খুন নয়। নেশাখোরদের নিজেদের মধ্যে গোলমালের জের।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওষুধ কিনতে বাড়ি থেকে বেরোন নাজিবুর। বইচগাছি ‘পুরাতন বাজারের’ সামনে রাকেশ পিয়াদা নামে এক ব্যক্তি তাঁকে কাঠ দিয়ে বেধড়ক পেটায় বলে পুলিশে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার। রক্তাক্ত নাজিবুরকে প্রথমে বারাসত জেলা হাসপাতাল এবং পরে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গভীর রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

শনিবার সকালে নাজিবুরের মৃত্যুর খবর আসতেই তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয় জনতা। ভয়ে এলাকা ছাড়ে রাকেশ। আমডাঙা থানার পুলিশ বইচগাছিতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে জনতা। নাজিবুরের বাবা মোজাফ্ফর মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা সিপিএম করতাম। পঞ্চায়েত ভোটের পর এই এলাকায় গোলমালের কারণে সাত মাস বাড়ি ছাড়া ছিলাম। দু’মাস আগে ফিরে এখন বিজেপি করছি।’’ ৬ বছরের একমাত্র ছেলেকে কোলে নিয়ে কাঁদছিলেন নাজিবুরের স্ত্রী শিউলি বিবি। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের সময় থেকে আমরা বিজেপি করি। তাই ওকে তৃণমূলের লোকেরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।’’

তৃণমূলের দাবি, নাজিবুর এবং অভিযুক্ত রাকেশ-সহ কয়েক জনকে এলাকায় এক সঙ্গে নেশা করতে দেখা যেত। সেই সব বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। বিধায়ক রফিকুর বলেন, ‘‘এখন তো কিছু হলেই তাতে রাজনৈতিক রং লাগাতে চাইছে বিজেপি।’’

নাজিবুরের বাড়িতে গিয়ে অর্জুন জানান, নিহতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। রফিকুরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘নিজে সাধু সেজে ভাইকে দিয়ে জমি লুট করাচ্ছেন বিধায়ক। আমডাঙা থানার আইসি, জেলার এসপি সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ রফিকুরের বক্তব্য, ‘‘আমার ভাই কী করে আর অর্জুন কী করে বেড়ান সবার জানা আছে।’’ এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চা দলের রাজ্য দফতরের সামনে মোমবাতি মিছিল করে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement