মেঘলা আকাশ। কনকনে শীত। সন্ধে থেকেই চারপাশ ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশায়। রাত যত বাড়ছে ততই ঘন হচ্ছে কুয়াশার চাদর। বিএসএফের অভিজ্ঞতা, ঠিক এই সময়টার জন্যই তো অপেক্ষায় থাকে পাচারকারীরা। আর সেই কারণেই শীত-মরসুমে নজরদারি বাড়িয়ে দেয় বিএসএফ। এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। মঙ্গলবার চাঁদনিচক সীমান্তের পথে ফের গরু পাচারকারীদের আনাগোনা দেখে তাড়া করে বিএসএফ। পাচারকারীদের অনেকেই গরু নিয়ে পিছু হটলেও ধরা পরে যায় দু’জন। তাদের এক জন মালদহের বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা।
বিএসএফের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সাহায্য নিয়ে সুতির পথ ধরে বাংলাদেশ সীমান্তে গরুগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শীত-মরসুমে এ ভাবেই বহিরাগতেরা আশ্রয় নিচ্ছে সুতির গ্রামে। সন্ধ্যের পরেই তারা সুযোগ বুঝে বেরিয়ে পড়ছে। তার পরে কাজকর্ম সেরে ফের উধাও হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনেকেই জানাচ্ছেন, এই সময় গ্রামে বহু নতুন মুখ দেখা যায়। তারা কোথাকার লোক, কোথায় থেকে এসেছে তা সে ভাবে কেউই জানে না। কিন্তু তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানেন। কিন্তু জেনেও কিছু বলার জো নেই। কারণ, তারা বিপজ্জনক।
গত কয়েক দিনে পাচার রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে বিএসএফ। সুতির চাঁদনিচক সীমান্ত বরাবর গভীর ভাবে খাল কেটে দিয়েছে বিএসএফ। বেশ কিছু এলাকা তারকাঁটা দিয়ে ঘিরেও দেওয়া হয়েছে। রাস্তা বরাবর আলোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। রাতে তাই আগের মতো অনায়াসে চরে নেমে পড়তে পারছে না পাচারকারীরা। যে এলাকায় এখনও আলোর ব্যবস্থা নেই এখন সেই এলাকাগুলোই বেছে নিচ্ছে পাচারকারীরা। পাচারকারীদের হাতে থাকছে বড় টর্চ। আঁধার দূর করতে নয়, সেই টর্চের তীক্ষ্ণ আলো সঙ্কেতের কাজ করে। সেই সঙ্কেত বুঝে কখনও সফল হয় পাচারকারীদের পরিকল্পনা। কখনও জিতে যায় বিএসএফের তৎপরতা।
বিএসএফের এক কর্তা বলছেন, “দূরে টাওয়ার থেকে অন্ধকারের মধ্যে কোনও আলো চোখে পড়লেই ওয়াকিটকিতে খবর যাচ্ছে অন্য জওয়ানদের কাছে। সেই মতো পাচারকারীদের কিছু বুঝতে না দিয়েই নিঃশব্দে তাদের পিছু ধাওয়া করছে বিএসএফের বিশেষ দল। এ ভাবে কখনও সাফল্য আসছে। কখনও পাচারকীরা গা ঢাকা দিচ্ছে এলাকার চেনা কারও বাড়িতে।