বিড়ির আগুনে ছাই দিল বাজেট!

আশা ছিল, বিড়ি যেহেতু কুটির শিল্প, সে কথা মাথায় রেখে বিড়ির উপর থেকে কমানো হবে জিএসটি’র হার। কিন্তু শনিবারের কেন্দ্রীয় বাজেট সঙ্কট থেকে বিড়ি শিল্পকে কোনও আশার আলো দেখাতে পারেনি।

Advertisement

বিমান হাজরা

অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২৮
Share:

জঙ্গিপুরে চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র

হাতে রইল সেই হতাশাই! শনিবারের বাজেটে বিড়ির উপর ২৮ শতাংশ জিএসটি বহাল রাখায় কার্যত অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ল রাজ্যের বিড়ি শিল্প। সঙ্কটে পড়ল মুর্শিদাবাদের ১২ লক্ষ বিড়ি শ্রমিকের রুজি।

Advertisement

আশা ছিল, বিড়ি যেহেতু কুটির শিল্প, সে কথা মাথায় রেখে বিড়ির উপর থেকে কমানো হবে জিএসটি’র হার। কিন্তু শনিবারের কেন্দ্রীয় বাজেট সঙ্কট থেকে বিড়ি শিল্পকে কোনও আশার আলো দেখাতে পারেনি।

জেলার জঙ্গিপুর মহকুমায় বিড়ি শিল্পে জড়িয়ে প্রায় ৭ লক্ষ শ্রমিক। দাবি, তাঁদের এখনও ন্যুনতম সরকারি মজুরি জোটে না। ২৫৪ টাকা ৯২ পয়সার জায়গায় প্রতি হাজার বিড়ি বেঁধে তাঁরা হাতে পান ১৫২ টাকা। ২৮ শতাংশ জিএসটি’র দাপটে বিড়ি বিক্রি কমেছে ৩৬ শতাংশেরও বেশি। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিনের বেশি কাজও নেই। আশা ছিল জিএসটি কমলে স্থিতাবস্থা ফিরবে বিড়ি শিল্পে। বাজেট তাতে ছাই ছড়িয়েছে। তামাক আইন চালুর উপরে জোর দেওয়ায় বিড়ি শ্রমিকদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ারও আশা ছিল তাঁদের, কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় সে সম্পর্কে কোনও উচ্চবাচ্যই করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।

Advertisement

ধুলিয়ানের তারাপুর কেন্দ্রীয় বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নত করতে উদ্যোগ নেবে, এমনই আশ্বাস মিলেছিল গত বাজেটে। কিন্তু কানাকড়িও বরাদ্দ বাড়েনি বিড়ি শ্রমিকদের চিকিৎসা খাতে। জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্প মহল্লায় প্রায় ৪০টিরও বেশি ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় দৈনিক বিড়ি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০ কোটি। ভিন রাজ্যের বাজারের উপরই নির্ভরশীল জঙ্গিপুরের এই বিড়ি। টোব্যাকো আইনের বিধিনিষেধ ও জিএসটি’র কারণে দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে বিড়ি বিক্রি যে ভাবে কমছে তাতে ভবিষ্যতে বিড়ি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা যে আর সম্ভব নয়, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিড়ি মালিক সংগঠনের কর্তারা। বিড়ি মালিক সংগঠনের সম্পাদক রাজকুমার জৈনের আশঙ্কা, ‘‘এ বার বিড়ি মালিকেরা শিল্পে মন্দা বলে অন্য ব্যবসায় চলে যেতে পারেন। কিন্তু জঙ্গিপুরের ৭ লক্ষ শ্রমিক, তাঁরা কোথায় যাবেন? রাজ্যের শ্রমপ্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন নিজে বিড়ি মালিক। তিনি বলছেন, “বাংলার বিড়ি দক্ষিণ ভারতের বিড়ি শ্রমিকেদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না। বাজারে বিড়ির বিক্রি প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে। কাজ কমেছে শ্রমিকদের।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement