পুরসভার হাসপাতালে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করেন ইউনানি চিকিৎসক। রাতের জরুরি বিভাগে তিনিই ত্রাতা রোগীর আত্মীয়দের কাছে। বিরাটিতে উত্তর দমদম পুরসভার হাসপাতালে চার বছর ধরে এমন কাণ্ডই চলেছে।
বড় হাসপাতাল। জরুরি বিভাগ, সব রকমের চিকিৎসা বিভাগ এখানে আছে। চিকিৎসকও অনেক। এখানে ২০১৩-য় নিয়োগ করা হয় ইউনানি চিকিৎসক মহম্মদ ইউনুসকে। হাসপাতালে ইউনানি চিকিৎসার বিভাগ নেই। যোগ দেওয়ার পর থেকে ইউনুস অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাই করেছেন। বহির্বিভাগে রোগী দেখতেন না। কিন্তু হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে অন্য অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকদের সঙ্গেই মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি।
বেলঘরিয়া, ডানলপ এলাকায় চেম্বার আছে ইউনুসের। এমবিবিএস না হয়েও কী ভাবে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করছেন তিনি? বুধবার ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমি তো কোথাও এমবিবিএস বলে লিখছি না। আমার শংসাপত্রও জাল নয়। পুরসভা আমার সব কাগজপত্র দেখেই নিয়োগ করেছিল। তাঁরাই এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’’ ওই চিকিৎসকের আরও দাবি, ‘‘ডাক্তারি আইনে কোথাও বলা নেই যে অ্যালোপ্যাথি হাসপাতালে আমরা চিকিৎসা করতে পারব না।’’
আরও পড়ুন: ভুয়ো ডাক্তার ধরতে সিট সিআইডি-র
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক সদস্য বলেন, ‘‘ইউনুসের মতো ইউনানি চিকিৎসক আছেন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেই। কিন্তু অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা ইউনানি চিকিৎসককে দিয়ে করানো আইনসিদ্ধ নয়।’’ বিষয়টি তাঁদের নজর এড়িয়ে গিয়েছে বলে মানছেন পুর কর্তৃপক্ষও। উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) মহুয়া শীল বলেন, ‘‘আমরা পুরবোর্ড তৈরি করার আগেই ওই চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছিল। আমরা তিন জন চিকিৎসকের শংসাপত্র ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর না পাওয়ায় তাঁদের বরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু এই চিকিৎসকের বিষয়টি নজর এড়িয়ে গিয়েছে।’’
হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, রাতে জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে অপারেশনের পর কী ওষুধ দেওয়া হবে, তা-ও হাসপাতালের প্যাডে লিখে দেন ইউনুস। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘উত্তর দমদম পুরসভার হাসপাতালের মতো অন্য হাসপাতালেও খোঁজ নিতে বলেছি। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।’’