ফাইল চিত্র।
বার বার বলা সত্ত্বেও বিভিন্ন কলেজ টাকা খরচের খতিয়ান না-দেওয়ায় এ বার কার্যত হুঁশিয়ারির রাস্তা নিল ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তারা জানিয়েছে, প্রায় কুড়ি বছর ধরে কলেজগুলি যে-টাকা নিয়েছে, তা কোথায় কী ভাবে খরচ হয়েছে, তার হিসাব-সহ নথিপত্র পাঠাতে হবে অবিলম্বে। বিভিন্ন খাতে নেওয়া টাকার সম্পূর্ণ হিসাব দিতে না-পারলে কলেজগুলিকে তা সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে। অন্যথায় ইউজিসি সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিকে সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে দেবে। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য তহবিল থেকেও কলেজগুলি আর সাহায্য পাবে না।
ইউজিসি কার্যত চরমপত্রের মতো করে চিঠি পাঠিয়ে কলেজগুলিকে জানিয়েছে, আগেও বহু বার এই হিসাব দাখিলের বিষয়ে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এ বার শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। চিঠি পাঠানোর তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেযথাযথ নথি-সহ হিসাব জমা দিতে হবে। তা দিতে না-পারলে বন্ধ হয়ে যাবে সাহায্য।
স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে কলেজে কলেজে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে। মূলত বই কেনা, বিভিন্ন সেমিনার বা আলোচনাচক্রের আয়োজন ইত্যাদি খাতে কলেজগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেয় ইউজিসি। অনেক কলেজে কুড়ি বছর আগেকার নথিপত্র এখন আর সংরক্ষিত নেই। অনেক কলেজের তরফে আগে হিসাব জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই হিসাব দাখিলের পদ্ধতিতে খুশি নয় ইউজিসি। তাই নতুন করে তা জমা দিতে বলা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কোনও কোনও কলেজ হিসাব তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ ছোটাছুটি করছে ইউজিসি দফতরে। নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী মঙ্গলবার জানান, এমন কিছু হিসাব চাওয়া হয়েছে, যা আগেই দেওয়া হয়েছিল। কিছু হিসাবের ক্ষেত্রে পুরনো নথি জোগাড় করা এখন অসম্ভব। যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায় বলেন, ‘‘বেশ কিছু হিসাব আমরা আগেই দিয়ে দিয়েছি। কয়েকটি এখনও দেওয়া হয়নি। আমরা ইউজিসি-কর্তৃপক্ষের কাছে আরও কিছুটা সময় চাইব।’’ দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজের অধ্যক্ষ সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, আগে যে-হিসাব দেওয়া হয়েছে আর এখন যে-ভাবে হিসাব চাইছে, তাতে ফরম্যাটের অনেক তফাত রয়েছে। নতুন ফরম্যাটে আবার হিসাব পাঠাতে হচ্ছে। রায়দিঘি কলেজের অধ্যক্ষ শশবিন্দু জানা ইতিমধ্যে ইউজিসি-র সল্টলেকের অফিসে গিয়েছিলেন। তিনি জানান, ইউজিসি-র আধিকারিকদের গোটা বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পরে সব কিছু গুছিয়ে হিসাব জমা দেওয়ার জন্য কিছুটা সময় পাওয়া গিয়েছে।