ফাইল চিত্র।
জাতীয় শিক্ষানীতির বেশ কিছু ধারা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা শিবিরের বড় অংশ অনেক আগেই আপত্তি জানিয়েছে। তার মধ্যেই দ্রুত ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’ রূপায়ণে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি সেল’ গড়ার জন্য দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নির্দেশ দিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর চেয়ারম্যান ডিপি সিংহ। এই শিক্ষানীতি ঘোষণার বর্ষপূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন কী কী বিষয়ের কথা ঘোষণা করেছেন, তার উল্লেখ করে এ ক্ষেত্রে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলেছেন ইউজিসি-প্রধান।
‘অ্যাকাডেমিক ক্রেডিট ব্যাঙ্ক’, কোনও কোর্স চলাকালীন পড়ুয়াদের একাধিক বার কলেজ ছেড়ে যাওয়া ও ঢোকার অধিকার, উচ্চশিক্ষার বিশ্বায়ন, পড়ুয়া ভর্তির হার বাড়ানোর জন্য দূরশিক্ষা ও অনলাইন শিক্ষার উপরে জোর দিতে বলেছেন মোদী। সেইর সঙ্গে ‘স্বয়মের’ মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষার ক্রেডিট বৃদ্ধি এবং কর্মমুখী শিক্ষার উপরে জোর দিতে বলেছেন তিনি। পুরো বিষয়টি এ বার বাস্তবায়িত করার জন্য উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছেন ইউজিসি-প্রধান।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস শুক্রবার বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা যা করার করব।’’ বিষয়টি নিয়ে সিন্ডিকেটে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটি’ প্রথম থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে আসছে। ওই কমিটির সম্পাদক এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তরুণ নস্কর এ দিন বলেন, ‘‘এই শিক্ষানীতির মাধ্যমে শিক্ষা তথা উচ্চশিক্ষা অনলাইন-ভিত্তিক হবে। দরজা খুলবে শিক্ষার কর্পোরেটাইজ়েশনের।’’ ইউজিসি-র ভূমিকা নিয়েও আপত্তি তুলেছেন তরুণবাবু। তিনি বলেন, "ইউজিসি-র মতো স্বশাসিত সংস্থা কোনও দিনই এমন নগ্ন ভাবে সরকারের নীতির পক্ষে নির্দেশ জারি করেনি।’’
রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (ওয়েবকুটা) সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত এ দিন বলেন, ‘‘শুরু থেকেই আমরা এই নীতির বিরোধিতা করে আসছি। শিক্ষার বেসরকারিকরণ এবং অনলাইন শিক্ষা প্রবর্তনের পথ সুগম করাই এই নীতির মূল অভিমুখ। ইউজিসি-র বিজ্ঞপ্তি এই সর্বনাশা নীতিগুলি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ।’’ তিনি জানান, ওয়েবকুটা বেশ কিছু দিন ধরে জাতীয় শিক্ষানীতির বিষয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় চেয়ে আসছে। কিন্তু এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সুযোগ এখনও পাননি তাঁরা।