ফাইল চিত্র।
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবকে এ বার দু’সপ্তাহ জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক। বুধবার এই মামলায় এক ওষুধ ব্যবসায়ী-সহ দু’জনের গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রের খবর।
দেবাঞ্জনকে এ দিন আদালতে তোলা হলে তার আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমার মক্কেল আলাদা ভাবে জাল প্রতিষেধক তৈরি করেননি। শুধু একটি ওষুধের শিশির গায়ের লেবেল বদল করে তার জায়গায় কোভিশিল্ডের লেবেল ব্যবহার করেছিলেন। ওই ওষুধ নেওয়ার পরে কারও মৃত্যু বা অসুস্থতার ঘটনা ঘটেনি। সে-ক্ষেত্রে খুনের চেষ্টার মামলায় দেবাঞ্জনকে অভিযুক্ত করা যায় না। তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হোক।’’
সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষালের সওয়াল, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে অ্যামিকাসিন সালফেট নামে একটি ওষুধের শিশির গায়ের লেবেল বদল করে কসবার ভুয়ো টিকা শিবির থেকে শতাধিক মানুষকে কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দেবাঞ্জনের ওই জাল প্রতিষেধকের নমুনা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। কী ধরনের জাল ওষুধ ছিল, তার সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। জাল প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কোনও ব্যক্তির এখনও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যতে তা হতে পারে। সেই কারণে প্রতিষেধক হিসেবে কোন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছিল, তা সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা প্রয়োজন। তদন্তের স্বার্থে দেবাঞ্জনের জামিন হওয়া উচিত নয়।’’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে দেবাঞ্জনকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক সুতীর্থ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেবাঞ্জন কসবার আগে সিটি কলেজে জাল টিকা দেওয়ার একটি শিবির করেছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ইন্দ্রজিৎ সাউ নামে অফিসের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সিটি কলেজে জাল টিকা শিবিরের আয়োজন করেছিল দেবাঞ্জন। গত শুক্রবার ইন্দ্রজিৎকে গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ। সে এখন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
আলিপুর আদালত সূত্রের খবর, ওই মামলায় জেল হেফাজত থেকে দেবাঞ্জনকে আবার পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার আর্জি জানানো হতে পারে। কারণ, ইন্দ্রজিৎ ও দেবাঞ্জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা জরুরি বলে মনে করছে পুলিশ।