কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত দুই পড়ুয়া-চিকিৎসক আগামী দু’মাস ক্লাস করতে পারবেন না। তার বদলে তাঁদের নিয়মিত আচরণ সংশোধনের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বুধবার ঘটনার তদন্ত কমিটি, অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ও কলেজ কর্তৃপক্ষ সম্মিলিত ভাবে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দু’মাস পরে পুনরায় বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
গত ৯ জানুয়ারি প্রকাশ্যে আসে যে, অস্থি বিভাগের ইউনিট-১ এর প্রথম বর্ষের দুই পিজিটি বিট্টু ধর এবং জনসন প্রবীণ আম্বেডকরের উপরে ওই বিভাগেরই দ্বিতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়া-চিকিৎসক প্রায় তিন মাস ধরে শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহ চালাচ্ছেন। অভিযোগ, প্রায় তিন মাস ধরে মানসিক অত্যাচারের পাশাপাশি মারধর, থুতু ছিটিয়ে দেওয়ার মতো অত্যাচারও চালানো হয়েছে ওই দুই পড়ুয়া-চিকিৎসকের উপরে। বিষয়টি জানার পরে উপাধ্যক্ষ অঞ্জন অধিকারীকে চেয়ারম্যান করে ছ’সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দফায় দফায় সব পক্ষ এবং সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে গত ১৯ জানুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন র্যাগিং-বিরোধী তদন্ত কমিটির সদস্যেরা। ওই তদন্তে অভিযোগের অনেকটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়।
কলকাতা মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগে ওই দুই পড়ুয়া-চিকিৎসকের দোষ প্রমাণিত হয়েছে। তাই শাস্তি যেমন পেতে হবে, তেমনই সংশোধনেরও সুযোগ রাখা হয়েছে।’’ জানা যাচ্ছে, অস্থি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই দুই পড়ুয়া-চিকিৎসক দু’মাস পঠনপাঠনে অংশ নিতে পারবেন না। ওই সময়কালে তাঁদের কোনও ছুটি মঞ্জুর হবে না। তার বদলে প্রতিদিন কলকাতা মেডিক্যালের স্বাস্থ্য-শিক্ষা কমিটির কোঅর্ডিনেটর তথা উপাধ্যক্ষের কাছে হাজিরা দিয়ে ‘অ্যাটিটিউড কমিউনিকেশন’-এর প্রশিক্ষণ নিতে হবে তাঁদের। সূত্রের খবর, অস্থি বিভাগে ওই সময়কালে যেতে পারবেন না তাঁরা। বদলে হাসপাতালের অন্য রোগীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেবেন। সে সময়ে তাঁদের আচরণ কেমন থাকছে, তা-ও দেখা হবে। কয়েক দিন অন্তর সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে।