এনআইএ-র চানঘরে কাচ খুলে পালানোর চেষ্টা, বন্দি হাসপাতালে

হোটেল ব্যবসার আড়ালে অভিযোগ কাকা-ভাইপো মিলে জাল নোটের কারবার চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই মালদহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল তারা। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ পরে নিজেদের হেফাজতে নেয় ধৃতদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

এই জানলা দিয়েই পালানোর চেষ্টা করে রাজেন। ছবি: শৌভিক দে।

হোটেল ব্যবসার আড়ালে অভিযোগ কাকা-ভাইপো মিলে জাল নোটের কারবার চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই মালদহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল তারা। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ পরে নিজেদের হেফাজতে নেয় ধৃতদের। সেই হেফাজত থেকে পালাতে গিয়ে রাজেনকুমার চোপড়া (২৫) নামে ধৃতদের এক জন আহত হয়েছে বলে দাবি এনআইএ-র।

Advertisement

রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে সল্টলেকে এনআইএ-র অফিসে। এই বিষয়ে ওই তদন্ত সংস্থার তরফে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এনআইএ সূত্রের দাবি, ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ সংস্থার অফিসের চারতলায় স্নান করার নামে একটি চানঘরে ঢুকে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় ওই বন্দি। সে যে চান করছে, সেটা জানান দেওয়ার জন্য কল খুলে দেয়। তার পরে রাজেন ওই চানঘরের জানলায় কয়েক স্তরে স্তরে লাগানো কাচ খুলে নেয়। সেই ফাঁকা জানলা দিয়ে গলে দেওয়ালে বাইরের দিকে লাগানো জলের পাইপ বেয়ে নীচে নামার চেষ্টা করে সে। সেখান থেকে কোনও ভাবে পিছলে গিয়ে সরাসরি নীচে পড়ে যায় রাজেন। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে তাকে সল্টলেক মহকুমা হাসপাতাল এবং পরে সেখান থেকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রাজেনের হাতে, ঘাড়ে ও মেরুদণ্ডে একাধিক আঘাত রয়েছে।

এনআইএ-র অভিযোগ, পঞ্জাবের ফতেগড় জেলার মান্ডি গ্রামের দুই বাসিন্দা সুরেশ কুমার ও তার ভাইপো রাজেন পারিবারিক হোটেল ব্যবসায় আড়ালে ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ ও পঞ্জাবে জাল নোটের কারবার চালাত। ১২ মে মালদহ থেকে তাদের গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। ২০ অগস্ট ধৃতদের হেফাজতে নেয় এনআইএ। সল্টলেকের আই-বি ব্লকে এনআইএ-র অফিসে রাজেনকে জেরা করা হচ্ছিল। বৈষ্ণবনগর, ধুলিয়ান, কালিয়াচক মিলিয়ে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে ইতিমধ্যে জাল নোটের কারবারের পাঁচটি মামলা রুজু করেছে এনআইএ। রাজেন-সুরেশ ছাড়াও আরও চার দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে।

Advertisement

এনআইএ-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, সুরেশ ও রাজেনের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ লক্ষ টাকার জাল নোট এবং ৮০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করা হয়েছে। আরও চারটি মামলায় মোট ৮৪ লক্ষ টাকার জাল নোট উদ্ধার করেছে এনআইএ। বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে সোজা ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ ও পঞ্জাবে জাল নোট পাচারের ক্ষেত্রে রাজেন ও সুরেশ ‘লিঙ্কম্যান’-এর কাজ করত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে বাংলাদেশের এক দুষ্কৃতীর নামও উঠে এসেছে।

প্রশ্ন উঠছে, এনআইএ-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার ব্যূহের মধ্য থেকে ওই বন্দি পালানোর চেষ্টায় এতটাই বা এগোল কী ভাবে?

সরাসরি জবাব মিলছে না। সল্টলেকে এনআইএ-র অফিসের মূল গেটের পাশে নিরাপত্তারক্ষীদের একটি অস্থায়ী ঘর রয়েছে। সেই ঘরের ছাদ ফাইবার শিটের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পাইপ বেয়ে নীচে নেমে রক্ষীদের ঘরের উপরে লাফ মেরে অফিসের বাইরে পালানোর ছক কষেছিল রাজেন। এনআইএ সূত্রের দাবি, গেটে সশস্ত্র রক্ষী ২৪ ঘণ্টা পাহারায় থাকে। ফলে পাইপ বেয়ে নীচে নামলেও সে ধরা পড়ে যেত। পালানোর কোনও সুযোগই ছিল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement