পোস্ট অফিসে ঢুকতে গিয়ে ভিড়টা কিঞ্চিৎ অচেনা ঠেকেছিল ডাক বিভাগের কর্মীদের। আর পাঁচটা দিনে মেরেকেটে যেখানে শ’খানেক গ্রাহক আসে, রানাঘাটের সেই প্রধান ডাকঘর খোলার আগেই বৃহস্পতিবার সেখানে শ’পাঁচেক গ্রাহকের লম্বা লাইন। ডাক-কর্মীদের অবাক হওয়ার বাকি ছিল আরও। লাইনে দাঁড়ানো সবাই স্পিড পোস্ট করতে চান, ঠিকানাও এক, দিল্লির শাস্ত্রী মার্গ।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ প্রকল্পে আবেদনপত্র। আবেদন পাঠালেই নাকি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে দু’লক্ষ টাকা।
ব্যাপারটা জানতে পেরে দুপুরেই জেলা প্রশাসনকে জানান ওই পোস্ট মাস্টার হারুন রশিদ। বলছেন, ‘‘বেটি বাঁচাও প্রকল্পে এমন প্রাপ্তিযোগ যে নেই তা জানি। গোটা ব্যাপারটার মধ্যেই ধাপ্পাবাজি আছে বলে মনে হচ্ছিল।’’ খবর পেয়েই প্রশাসনের তরফেও রানাঘাট পুর এলাকায় শুরু হয় প্রচার— ‘ফাঁদে পা দেবেন না।’
কিন্তু ছড়াল কী করে এই গুজব?
লাইনে দাঁড়ানো রানাঘাট বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রাণী ঘোষ বলছেন, ‘‘গত দু’দিন প্রচার চলছিল মুখে মুখে। এলাকার বহু জেরক্সের দোকানে চাইলেই মিলছিল কুড়ি টাকার ফর্ম।’’ যেখানে হিন্দিতে, ভুল বানানে দিল্লির ওই ঠিকানা লেখা। ফর্মের বয়ান বলছে— গ্রাম এবং শহরের ৮-৩০ বছরের মেয়েরা আবেদন করতে পারেন। আবেদন করলেই অ্যাকাউন্টে দু’লক্ষ। এ দিনই স্থানীয় পুলিশ রানাঘাটের অধিকাংশ জেরক্সের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। কাউকে ধরা যায়নি।