arrest

দু’বছরের বালি ব্যবসায় ফুলেফেঁপে ওঠে ধৃতেরা

পুলিশ জানায়, অভিযানে থাকা এক পরিবহণ আধিকারিকের শরীরে লাগানো ক্যামেরায় প্রায় ২৭ মিনিটের ফুটেজ মিলেছে। তার সূত্র ধরে তদন্ত চলছে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক সময়ে তাঁরা গাড়ি চালাতেন। কয়েক বছর আগে শুরু করেন বালির ব্যবসা। তাতেই ফুলেফেঁপে উঠেছেন। পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও নাকি সেই সময় থেকেই তাঁদের দহরম মহরম। তখন থেকে তাঁদের মধ্যে একটা বেপরোয়া ভাব আসে— এমনই অভিযোগ স্থানীয় লোকজনেরও। আইন-শৃঙ্খলাকে পরোয়া না করার সেই মনোভাব থেকেই কি পূর্ব বর্ধমানের কালনায় পরিবহণ দফতরের গাড়িকে ধাওয়া করেন তাঁরা, গুলি ছোড়েন সেই গাড়ি লক্ষ করে? বুধবার গভীর রাতের এই দুঃসাহসিক ঘটনার পরে দু’জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। তার পরে এই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযানে থাকা এক পরিবহণ আধিকারিকের শরীরে লাগানো ক্যামেরায় প্রায় ২৭ মিনিটের ফুটেজ মিলেছে। তার সূত্র ধরে তদন্ত চলছে।

পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরের কাছে বুধবার মাঝ রাতে ট্রাকে বাড়তি মাল বোঝাই নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময়ে ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনার পরে পরিবহণ আধিকারিক প্রীতম কর্মকার হামলাকারী গাড়ির নম্বর দিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। তার সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার শান্তনু মজুমদার ও পুলক ওরফে পিকলু রায় নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের শান্তনু এক সময়ে পূর্বস্থলীর প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ সাহার গাড়ি চালাতেন। পরে এলাকার এক বিজেপি নেতার গাড়ি চালাতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বছর দুয়েক বালির কারবার করছেন শান্তনু। পুলিশ, পরিবহণ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলাপ রয়েছে বলে এলাকায় দাবি করতেন। শান্তনুর গোটা পাঁচেক ডাম্পার রয়েছে বলে জেনেছে পুলিশ। পিকলুও এক সময়ে গাড়ি চালাতেন। সম্প্রতি তিনিও শান্তনুর সঙ্গে বালির ব্যবসা শুরু করেন। প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ শুক্রবার বলেন, ‘‘২০১৪ থেকে বছর দুয়েক আমার গাড়ি চালিয়েছিল শান্তনু। বিধায়ক হওয়ার পরে অন্য চালক আসেন। পরে শান্তনু গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন বলে জেনেছি।’’ শান্তনু ও পিকলু অবশ্য আদালত চত্বরে দাবি করেন, তাঁদের ফাঁসানো হচ্ছে।

পরিবহণ দফতরের কর্তাদের ধারণা, অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়িকে মোটা জরিমানা করায় আক্রোশ ছিলই। কর্মীরা ছবি তোলায়, তাঁদের ভয় দেখাতেই ধাওয়া করে গুলি ছোড়া হয় বলে অনুমান। অভিযানে পুলিশ এবং ক্যামেরা রাখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। পরিবহণ দফতরের অভিযানে থাকা এক কর্মী জানান, ‘‘দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচতে ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা গতিবেগে ছুটছিল আমাদের গাড়ি। পুলিশকে ফোন করা হয়। পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে রাস্তার ধারে পুলিশের ভ্যান দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement