—প্রতীকী চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট এবং গণনা-পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। এ বার বোর্ড গঠন পর্বে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কার্যত একই অভিযোগ শোনা গেল শাসক দলের কিছু জয়ী সদস্যের মুখে।
বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার বেগমপুর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন ঘিরে মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের জয়ী সদস্যদের একাংশের অভিযোগ, প্রধান এবং উপ-প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁদের মতামত নেওয়া হয়নি। ভোটাভুটি ছাড়াই জোর করে প্রধান ও উপ-প্রধান করা হয়েছে। এমনকি, সিদ্ধান্ত মানতে না চাওয়ায় কিছু সদস্যকে পুলিশের সামনেই বহিরাগত লোকজন এনে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। বিধানসভা এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি।
বেগমপুর পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৬টি। এর মধ্যে ১৪টিতেই জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। একটি আসনে বিজেপি ও একটি আসনে নির্দল প্রার্থী জিতেছেন। এই পঞ্চায়েতে এ দিন প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন রেখা সর্দার। উপ-প্রধান হয়েছেন রিয়া বর্মণ। কিন্তু দলের একাংশের অভিযোগ, জয়ী সদস্যদের অধিকাংশই এই প্রধান ও উপ-প্রধানকে চাননি। ডলি সর্দার নামে তৃণমূলের এক জয়ী সদস্যের দাবি, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটাভুটি করে প্রধান ও উপ-প্রধান নির্বাচন হোক। কিন্তু আমাদের মতামতই নেওয়া হয়নি! আমাকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। জোর করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত মানছি না।’’ বিপুল মণ্ডল নামে আর এক সদস্যের দাবি, ‘‘স্থানীয় বিধায়কের মদতে বাইরের লোকজন পঞ্চায়েতে ঢুকে আমাকে মারধর করেছে। আমাদের ভোট দিতে দেওয়াই হয়নি।’’ পঞ্চায়েতের সামনে দফায় দফায় এ দিন বিক্ষোভ দেখান দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ।
পাশের চম্পাহাটি পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন অসিত বরণ মণ্ডল। উপ-প্রধান হয়েছেন মিতালি গায়েন। এখানেও ভোটাভুটি করা হয়নি বলে অভিযোগ জয়ী সদস্যদের একাংশের। বিদায়ী প্রধান মান্না নস্কর বলেন, “কোনও ভোটাভুটি হয়নি। প্রতিবাদে আমরা ১৩ জন সদস্য বেরিয়ে আসি।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ মানেননি। বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের সভাপতি শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘দলের নির্দেশ মতো অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন নিয়েই প্রধান এবং উপ-প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। কিছ সদস্য প্রধান, উপ-প্রধান হতে না পেরে ক্ষোভ প্রদর্শনের রাস্তায় হাঁটছেন। তাদের ব্যাপারে দল পরে সিদ্ধান্ত নেবে।’’