দুই বর্ধমানেই কাজিয়া তুঙ্গে, নাকাল সিপিএম

পূর্ব বর্ধমানে সমস্যা ছাত্র ফ্রন্টকে নিয়ে। আর পশ্চিমে গোলমাল মূলত শ্রমিক ফ্রন্টে। যে বর্ধমান এক কালে লাল দুর্গ ছিল, সেই ভাঙা গড়েই এখন কোন্দল সামলাতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে!

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

মেরুকরণের দাপটে রাজ্য জুড়ে জমি হারাতে হচ্ছে। অথচ এমন দুর্দিনেও দুই বর্ধমান জেলায় সংগঠনে অন্দরের বিরোধ সামাল দিতে জেরবার সিপিএম! পূর্ব বর্ধমানে সমস্যা ছাত্র ফ্রন্টকে নিয়ে। আর পশ্চিমে গোলমাল মূলত শ্রমিক ফ্রন্টে। যে বর্ধমান এক কালে লাল দুর্গ ছিল, সেই ভাঙা গড়েই এখন কোন্দল সামলাতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে!

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানে ছাত্র ফ্রন্টের সমস্যা বড় আকার নিয়েছিল এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলনের সময়েই। ওই জেলায় দলের মধ্যে লড়াই অমল হালদার, অচিন্ত্য মল্লিকদের সঙ্গে সুকান্ত কোঙার, সাইদুল হক গোষ্ঠীর। তার ছায়া পড়েছে ছাত্র ফ্রন্টেও। লাগাতার বিরোধের মাঝেই সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দল-বিরোধী’ পোস্টের জন্য সাসপেন্ড ও শো-কজ করা হয়েছে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর প্রাক্তন সদস্য সৌমেন কার্ফাকে। তার পরেই গলসি-২ এরিয়া কমিটিকে চিঠি পাঠিয়ে ছাত্র ফ্রন্ট থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন মনসিজ হোসেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ছাত্র ফ্রন্টের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ চলছে। দলের অন্য একাংশের যদিও অভিযোগ, কৃষক সভার জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের ভাইপো মনসিজকে ‘চাপ’ দিয়ে ‘বিক্ষুব্ধ’ ছাত্র নেতা চন্দন সোমদের থেকে আলাদা করার জন্যই চিঠি লেখানো হয়েছে। যোগাযোগ করা হলেও মনসিজ ফোন ধরেননি।

সমস্যা এবং চাপের মুখে সিপিএমের পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের তরফে অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন জেলা সম্পাদক অচিন্ত্যবাবু। কিন্তু সেই সময়েই আবার ভাতার-১ এরিয়া কমিটিকে চিঠি দিয়ে সংগঠনের যাবতীয় দায়িত্ব ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন ওই বিধানসভা কেন্দ্রে ২০১১ সালের সিপিএম প্রার্থী শ্রীজিৎ কোঙার। জল গলার উপরে উঠছে দেখে আলিমুদ্দিনের নেতারা বর্ধমান থেকে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যকে বলেছেন জেলার সমস্যা মেটাতে আলোচনায় বসার জন্য। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সমস্যা যখন মিটছে না, কথা বলে দেখতে হবে।’’

Advertisement

পশ্চিম বর্ধমানে আবার দলের নতুন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ১০ জন সদস্যের মধ্যে দুর্গাপুরের এক জনও ঠাঁই না পাওয়ায় বেঁকে বসেন ওই এলাকার নেতারা। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে সিটুর অস্তিত্ব এখনও চোখে পড়ার মতো। সংগঠনে ‘অবিচারে’র বিহিত চেয়ে দুর্গাপুরের শ্রমিক নেতারা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন। আলিমুদ্দিন থেকে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তাঁদের দাবি বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে দুর্গাপুরের কিছু নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং সংগঠনের খবর ‘ফাঁসে’র তদন্ত করতে আলাদা কমিশন গড়া হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানে। যার জেরে সমস্যা আরও জটিল! দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের আক্ষেপ, ‘‘আন্দোলনের বদলে এ সবেই সময় অপচয় হচ্ছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement