জয়ের আনন্দেও ‘বেইমানি’র কাঁটা

সবং কেন্দ্রে ১৯৮২ সাল থেকে মোট ৬ বার জিতেছিলেন কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়া। এখন তিনি তৃণমূলে। তাঁর স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া এ বার ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে মানসবাবুর গত বছরের জয়ের চেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিরাট জয়ের মধ্যেও অস্বস্তির কাঁটা বিঁধে রইল তৃণমূলে! মূল সবং এলাকার অন্তত চারটি অঞ্চলে কম ভোট পেল শাসক দল। উপনির্বাচনের ফলাফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণে রবিবার এই তথ্য হাতে পেয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব দলের একাংশের ভূমিকাকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন।

Advertisement

সবং কেন্দ্রে ১৯৮২ সাল থেকে মোট ৬ বার জিতেছিলেন কংগ্রেসের মানস ভুঁইয়া। এখন তিনি তৃণমূলে। তাঁর স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া এ বার ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে মানসবাবুর গত বছরের জয়ের চেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। সবংয়ে মানসবাবুর ‘ব্যক্তিগত’ যে ভোট ছিল, কংগ্রেসের বাক্স থেকে তার প্রায় সবই তিনি টেনে নিয়েছেন তৃণমূলের দিকে। সব মিলিয়ে তাদের ভোটের হার গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৫%। যার জেরে মানস-অনুগামীরা বলছেন সবং আর মানস ভুঁইয়া সমার্থক, এই ‘মিথ’ সত্য প্রমাণিত হয়েছে উপনির্বাচনে!

কিন্তু অস্বস্তি থাকছে তার পরেও। প্রাথমিক হিসাবে তৃণমূল নেতৃত্ব দেখছেন, সবং এলাকার অন্তত ৪টি অঞ্চলে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। ওই এলাকাগুলি দলের তরফে নিয়ন্ত্রণ করেন নারায়ণ সাঁতরা, শঙ্কর জানা, নিবারণ সামন্ত এবং অমূল্য মাইতি। দলের একাংশের আশঙ্কা, শেখ মুন্না ও তার দলবল ওই এলাকায় যা ভোট করেছে, তার ফল আখেরে গিয়েছে তৃণমূলের বিপরীতে! জয়ের আনন্দে এই অস্বস্তির কাঁটা এখন ধামাচাপা পড়লেও তৃণমূলের একাংশ মোটেই এই পরিস্থিতি ভাল ভাবে নিচ্ছে না। তারা চাইছে, মানসবাবুরা সবংয়ের ফলের এই দিকটা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আনুন। যাতে পরে বড় ‘বিপদ’ না হয়।

Advertisement

মানসবাবু অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্যই করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই জয় ভালবাসার জয়, স্নেহের জয়, মমতার জয়। এখন আর অন্য কিছু ভাবছি না।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের দিক থেকে তৃণমূল-আশ্রিত বাহিনী ঢুকে ময়না, পটাশপুর, পিংলার লাগোয়া বুথগুলি কব্জা করেছিল। সেখানে শাসক তৃণমূলকে জিতিয়ে বিরোধীরা কে কত ভোট পাবে, সবই ‘নির্ধারণ’ করে দেওয়া হয়েছে! আবার তৃণমূলের প্রাক্তন ভোট-ম্যানেজার মুকুল রায়ের সঙ্গে দলের একাংশ তলে তলে যোগাযোগ রেখেছিল বলেও অভিযোগ আছে শাসক দলের অন্দরে। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন অবশ্য এমন সব অভিযোগে আমল দিতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কে কোথায় পড়েছিলেন, জলে পড়েছিলেন নাকি কাদায়, আমি জানি না! কে কোন স্থান পেয়েছে, তা নিয়েও ভাবছি না। আমাদের কাছে মূল বিষয় হল, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে আস্থা রেখেছেন।’’

গভীর অস্বস্তিতে অবশ্য কংগ্রেসই। আগেকার জেতা আসনে তারা চতুর্থ! তবে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের দাবি, ‘‘প্রচুর প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কংগ্রেসের কর্মীরা যে লড়াই করেছেন, সেটাই বড় কথা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement