উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক সংখ্যা বাড়ায় বিধানসভার বিভিন্ন কমিটিতে শুরু হয়েছে কাটছাঁট ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে চলায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার কমিটিতে সকলকে ঠাঁই দেওয়ার সমস্যা তৈরি হয়েছে। সমাধানে আপাতত একটি কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করার রাস্তা বেছে নিচ্ছে অধ্যক্ষের সচিবালয়। সম্প্রতি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরোহিত্যে বসে রুলস কমিটির বৈঠক। সেখানেই ঠিক হয়, রিফমর্স কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ করা হতে পারে। কিন্তু তাতেও পুরো সমস্যা মিটবে না। তাই বর্তমানে তিন কিংবা চারটি করে কমিটির সদস্য হয়ে রয়েছেন এমন কয়েক জন তৃণমূল বিধায়কের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে সচিবালয়কে। তাঁদের একটি করে কমিটি থেকে পদত্যাগ করানোর নির্দেশ দিয়েছে পরিষদীয় দল। সেই জায়গায় নবনির্বাচিত বিধায়কদের নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই নির্দেশ পেয়েই পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক।
সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের পর তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী বিধায়কের সংখ্যা ২১৬। এ ছাড়া বিজেপি থেকে আরও পাঁচ বিধায়ক শাসক শিবিরে এসেছেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শূন্য বালিগঞ্জে ভোট হবে ছ’মাসের মধ্যে। দল সেখানেও হেলায় জয় পাবে বলে নিশ্চিত তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিজেপি থেকে আরও কয়েক জনের আগমনের অপেক্ষায় ভাবনায় তৃণমূল। তাই এখন থেকেই এই বিধায়কদের কমিটিতে ঠাঁই দেওয়ানোর জন্য সচিবালয়কে কাজ শুরু করে দিতে হয়েছে শীতকালীন অধিবেশনের শেষেই। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, বিভিন্ন দফতরের কাজের পর্যালোচনা করতে বিধানসভায় ১৫টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। সেগুলির সদস্য সংখ্যা ১৫। এ ছাড়া বিধানসভার নানা কাজকর্ম খতিয়ে দেখার জন্য রয়েছে আরও ২৬টি কমিটি। এগুলিতে সর্বোচ্চ ২০ জন বিধায়ক থাকতে পারেন। প্রত্যেক বিধায়ককে ন্যূনতম দু'টি করে কমিটির সদস্য করা হয়। সে ক্ষেত্রে প্রতি মাসে প্রত্যেক কমিটির দু'টি করে মিটিং হলে মোট চার বার আলোচনায় বসার জন্য বিধায়করা নিশ্চিত ভাবে ৬০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন।
দু’দফার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে যে সাত জন জিতেছেন, তাঁদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধি অনুযায়ী বিধানসভার কোনও কমিটির সদস্য হবেন না। কিন্তু বাকি পাঁচ জনকে অন্তত দু'টি করে কমিটিতে রাখতে হবে তাঁদের বৈঠক-ভাতা নিশ্চিত করতে। উপায় খুঁজতে গিয়ে একমাত্র রিফমর্স কমিটিতে আরও পাঁচ জন নতুন সদস্য করার সুযোগ থাকার বিষয়টি সামনে আসে। পাশাপাশি কলকাতা বা উপকণ্ঠের বাসিন্দা এবং ইতিমধ্যে তিনটি করে কমিটির সদস্য হয়ে থাকা কয়েক জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের একটি করে কমিটির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ানোর পর সেই শূন্যস্থানে সদ্যনির্বাচিত বিধায়কদের নাম ঢুকিয়ে তাঁদের বৈঠক-ভাতা সুনিশ্চিত করা যাবে।