মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যের নিন্দা করল তাঁর দল তৃণমূল। ফাইল চিত্র।
দলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মা কালী সংক্রান্ত মন্তব্যে সায় নেই তৃণমূল নেতৃত্বের। মঙ্গলবার টুইট করে মহুয়ার ওই মন্তব্য থেকে দূরত্ব রচনা করেছেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব।
সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে দেবী কালীকে নিয়ে একটি ছবির পোস্টার সংক্রান্তে প্রশ্নের প্রেক্ষিতে একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। তার পরেই তাঁর সেই মন্তব্য নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়। বিজেপি নেতারা মহুয়ার বক্তব্য নেটমাধ্যমে ভাইরাল করে তাঁকে আক্রমণ শানাতে শুরু করেন।
মঙ্গলবারই বিজেপি নেতাদের আক্রমণের জবাব দেন মহুয়া। তিনি টুইট করেন, ‘আমি সঙ্ঘীদের বলতে চাই, অসত্য বলে আপনারা ভাল হিন্দু হতে পারবেন না। আমি কখনওই কোনও চলচ্চিত্রের কোনও পোস্টারের সমর্থন করে ধূমপান শব্দের উল্লেখ করিনি। তারাপীঠে গিয়ে দেখে আসুন সেখানে দেবীকে প্রসাদ হিসেবে কী ধরনের খাবার বা পানীয় দেওয়া হয়।’
ঘটনাচক্রে, মহুয়ার ওই টুইটের কিছুক্ষণ পরেই সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয় দলীয় সাংসদের মন্তব্যের দায় কোনওভাবেই দলের নয়। টুইটে লেখা হয়, ‘একটি অনুষ্ঠানে দেবী কালী প্রসঙ্গে মহুয়া মৈত্র যে মন্তব্য করেছেন, তার দায় কোনওভাবেই নিচ্ছে না তৃণমূল। তৃণমূল ওই মন্তব্য সমর্থন করে না বা মান্যতা দেয় না। সর্বভারতীয় তৃণমূল এই ধরনের মন্তব্যের নিন্দা করছে।’
প্রসঙ্গত, ভারতীয় পরিচালক লীনা মানিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্রের একটি পোস্টারে দেবী কালী রূপে এক মহিলাকে ধূমপান করতে দেখা যাচ্ছে। যা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
মহুয়া অভিযোগ করেছিলেন, ওই ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের নেতারা তাঁর নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই বিতর্কে টানার চেষ্টা করছেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের টুইটটি প্রকাশ্যে আসার পর আরও একটি টুইট করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। সেখানে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা, ‘সত্যমেব জয়তে’।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মঙ্গলবার ওই বিষয়ে প্রশ্ন করায় বলেছেন, ‘‘দেবী কালী নিয়ে এমন মন্তব্যের পর রাজ্য তথা দেশের নানা প্রান্তে এফআইআর হচ্ছে বলে শুনেছি। নূপুর শর্মাকে গ্রেফতার করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা দেখতে চাই, তাঁর দলের সাংসদের নিন্দনীয় মন্তব্যের পর তিনি কী ব্যবস্থা নেন।’’
তৃণমূলের একাংশের আবার বক্তব্য, মা কালী বাংলায় কী ভাবে পূজিত হন, তা সকলেই জানেন। সেই পূজার উপচারে কী থাকে, তা-ও কালীভক্তেরা জানেন। বিজেপির ‘বহিরাগত’রা বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছে। দলের ওই অংশের বক্তব্য, বাংলা এবং বাঙালিয়ানার উপর ভিত্তি করেই তৃণমূল ২০২১ সালে বিজেপিকে হারিয়েছিল। এখন তারাই বাঙালির ‘কালীভক্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করছে!