সমুদ্রে নজর রাখতে ট্রলারে ট্রান্সপন্ডার

বিদেশি ট্রলারে চড়ে এসে জঙ্গিরা ২০০৮ সালে নাশকতা ঘটিয়েছিল মুম্বইয়ে। তার পুনরাবৃত্তি রুখতে সমুদ্রে নজরদারি বাড়াতে চাইছে নৌবাহিনী। সেই জন্য এ বার হাতিয়ার করা হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া এ দেশের দু’লক্ষ ৪০ হাজার ট্রলারকে। ওই সব ট্রলারে বসানো হচ্ছে ‘ট্রান্সপন্ডার’। নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল রবীন ধোয়ান সোমবার কলকাতায় এ কথা জানান। ট্রান্সপন্ডার বসানোর উপকার পাওয়া যাবে দু’দিক থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০৪:১০
Share:

ট্রান্সপন্ডার

বিদেশি ট্রলারে চড়ে এসে জঙ্গিরা ২০০৮ সালে নাশকতা ঘটিয়েছিল মুম্বইয়ে। তার পুনরাবৃত্তি রুখতে সমুদ্রে নজরদারি বাড়াতে চাইছে নৌবাহিনী। সেই জন্য এ বার হাতিয়ার করা হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া এ দেশের দু’লক্ষ ৪০ হাজার ট্রলারকে। ওই সব ট্রলারে বসানো হচ্ছে ‘ট্রান্সপন্ডার’।
নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল রবীন ধোয়ান সোমবার কলকাতায় এ কথা জানান। ট্রান্সপন্ডার বসানোর উপকার পাওয়া যাবে দু’দিক থেকে। প্রথমত, যে-সব ট্রলারে সেগুলো বসানো হচ্ছে, ওই যন্ত্রের সাহায্যে নজরদারি চালানো যাবে তাদের উপরে। দ্বিতীয়ত, ওই সব দেশি ট্রলারের ভিড়ে বাইরের কোনও ট্রলার ঢুকে পড়ছে কি না, নজর রাখা যাবে সে-দিকেও। ধোয়ান জানান, এমনিতেই সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে সব ট্রলার নৌসেনার রেডারের আওতায় থাকে। কিন্তু তাদের ভিড়ের মধ্যে দু’-একটি বিদেশি ট্রলার ঢুকে গেলে সেগুলোকে এখন আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা যায় না। দেশি ট্রলারে ট্রান্সপন্ডার থাকলে তার সঙ্কেত থেকেই সেগুলোকে চিহ্নিত করা যাবে। আর যে-সব ট্রলার থেকে কোনও সিগন্যাল মিলবে না, বোঝা যাবে সেগুলো ভিন্‌ দেশের। তৎক্ষণাৎ সেগুলোর পিছনে ধাওয়া করবে নৌবাহিনী।

Advertisement

কী এই ট্রান্সপন্ডার?

এটি এক ধরনের তার-বিহীন যন্ত্র, যা নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দূরবর্তী জায়গা থেকে বেতারতরঙ্গ মারফত সিগন্যাল পাঠাতে পারে। সেই সিগন্যাল দেখে তার যথাযথ অবস্থান বোঝা যায়। ট্রলারে ওই যন্ত্র বসানোর উপযোগিতা ব্যাখ্যা করেন নৌসেনা প্রধান। তিনি বলেন, ‘‘রেডার থেকে পাওয়া ছবিতে মনিটরে ফুটে ওঠে ট্রলারের গতিবিধি। এ দেশের সব ট্রলারে ট্রান্সপন্ডার বসানো থাকলে তাদের অবস্থান বোঝা যাবে। ট্রান্সপন্ডারের পাঠানো সিগন্যালই তাদের চিনিয়ে দেবে। রেডারে এর বাইরে এক বা একাধিক ট্রলারের উপস্থিতি ধরা পড়লেই সঙ্গে সঙ্গে তাদের পিছনে ধাওয়া করা হবে।’’

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও এ দেশের সমুদ্রোপকূলে রয়েছে আটটি রাজ্য। ট্রলারে ট্রান্সপন্ডার বসাতে ওই ন’টি রাজ্য সরকারের সহযোগিতা দরকার বলে জানিয়েছেন নৌসেনা প্রধান। তিনি বলেছেন, ‘‘ট্রান্সপন্ডার বসানোর কাজ শীঘ্রই শুরু হয়ে যাবে। সংসদে এ বিষয়েসিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

শহরে নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল রবীন ধোয়ান।
সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

এই ব্যবস্থা চালু হলে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ধীবরদেরও সুবিধা হবে বলে জানান অ্যাডমিরাল ধোয়ান। খারাপ আবহাওয়া বা অন্য কোনও কারণে মাঝসমুদ্রে কোনও ট্রলার বিপদে পড়লে ট্রান্সপন্ডার তার অবস্থান জানাতে সাহায্য করবে। তাতে উদ্ধারকাজও সহজ হবে।

নৌসেনা সূত্রের খবর, যে-সব মৎস্যজীবী সমুদ্রে যান, তাঁদের জন্য পৃথক পরিচয়পত্র তৈরি করা হচ্ছে। তাতে একটি ‘চিপ’ লাগানো থাকবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সবিস্তার তথ্য, তাঁর আঙুলের ছাপ থাকবে। মাঝসমুদ্রে আচমকা হাজির হয়ে ট্রলারে থাকা ব্যক্তিদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করবেন নৌ অফিসারেরা।

সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ ধ্বংস করতে দক্ষ যুদ্ধজাহাজ তৈরি করেছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই)। আজ, মঙ্গলবার সেটি তুলে দেওয়া হবে নৌবাহিনীর হাতে। অ্যাডমিরাল ধোয়ান বলেন, ‘‘দেশে তৈরি ইস্পাত দিয়েই এই ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ তৈরি করা হয়েছে। এর ৯০% যন্ত্রপাতিও এ দেশেইতৈরি হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement