৩২৩ বছর আগে শুরু হয়েছিল রতুয়া বাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব। জমিদার জহুর খাঁর হাত ধরে। এখন দায়িত্বে স্থানীয় একটি ক্লাব। শোনা যায়, কালিন্দী নদীর ঘাটে দেবীর কাঠামো ভেসে এসেছিল। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ওই কাঠামো তুলে এনে নদীর পাশেই বটগাছের নীচে স্থানীয়দের নিয়ে পুজো শুরু করেছিলেন জহুর খাঁ। দেবীর চক্ষুদানের পর ওই পুজোয় প্রথম পাঁঠাবলি দিয়েছিলেন বাহারালের রায় পরিবার। আজও ওই পুজোয় রায় পরিবারের তরফে প্রথম পাঁঠাবলি দেওয়া হয়।
এখান থেকে চার কিলোমিটার দূরের বাহারাল শরত্চন্দ্র মেমোরিয়াল ক্লাবের পুজো। চার দশকের পুরনো। বাহারাল শরত্চন্দ্র মেমোরিয়াল ক্লাবে রয়েছেন উভয় সম্প্রদায়ের লোকজন। ওই ক্লাবের আজীবন সদস্যদের তালিকায় রয়েছেন রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর। এক সময় প্রিয়বাবু প্রতি বছর এই পুজোর উদ্বোধন করতেন।
মালদহের রতুয়ায় দু’টি পুজোরই মূল সূর সম্প্রীতি। প্রথম পুজোটিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব আয়োজন করেন রবীন্দ্রনাথ দাস, শেখ হান্নান, শচীন্দ্রপ্রসাদ দাস, ইসরারুল শেখরা। পুজো হয় তিন শতকের পুরনো রীতি মেনে। আর বাহারাল থিমের ভাবনায় পাল্লা দিচ্ছে আধুনিকতার সঙ্গে। কিন্তু সব ছাপিয়ে সম্প্রীতির সুরেই ওই দুই পুজোকে ঘিরে মেতে ওঠেন রতুয়ার বাসিন্দারা।
বাহারালের এ বারের পুজোর থিম হারিয়ে যাওয়া কুটির শিল্প। কুলো দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপ। পুজোর কয়েক দিন থাকছে আদিবাসীদের নানা সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। এলাকার অভাবী পরিবারের খুদেদের পুজোর পোষাকও কিনে দেওয়া হয় উদ্যোক্তাদের তরফে।
পুজো কমিটির তরফে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র রায় বলেন, ‘‘উত্সব সবার। বিত্তশালী-দুঃস্থ নির্বিশেষে আমরা সবাই আছি সবার সঙ্গে।’’