জমজমাট দার্জিলিংয়ের ম্যাল। —নিজস্ব চিত্র।
হোটেলে চেক-ইন করেই খোঁজ পড়ছে—ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে তো, কিংবা দুর্ঘটনা ঘটলে হোটেল থেকে তড়িঘড়ি বেরনোর জরুরি সিঁড়ি-পথটা সংকীর্ণ নয় তো?
নেপালের ধাক্কা কাটিয়ে পুরনো ছন্দে ফেরার পথে পাহাড়ে পর্যটকদের মুখে এখন এমনই প্রশ্নের ভিড়।
সংশয় থাকলেও পক্ষকাল আগে বুকিং বাতিলের হিড়িক পড়ে যাওয়া পাহাড়-বিমুখ পর্যটককুল অবশ্য দার্জিলিং ও তার কোল ঘেঁষা পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পা ফেলতে শুরু করেছেন।
দার্জিলিঙের ম্যাল, চকবাজারের সরু রাস্তা কিংবা ঘোড়ায় চড়ার চেনা ভিড়টা ফের দেখা যেতে শুরু করেছে। শুধু দার্জিলিং কেন, কালিম্পং-কার্শিয়াং এমনকী লাভা-লোলেগাঁও, রিশপ, ধোতরের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও গ্রীষ্মের চেনা ভিড়টা ফিরতে শুরু করেছে বলেই হোটেল ব্যবসায়ী এবং পাহাড়ের ট্যুর অপারেটরেরা জানাচ্ছেন।
গ্রীষ্মের মুখে দার্জিলিঙের ছোট-মাঝারি সব হোটেলেই চেনা শব্দ ‘ঠাই নাই’। গত কয়েক দিন ধরে বুকিং বাতিলের হিড়িকে খালি হতে শুরু করেছিল হোটেলের ঘরগুলি। এক হোটেল মালিকের কথায়, ‘‘তিন মাসের আগাম বুকিংও পর পর বাতিল হয়ে যাচ্ছিল। তবে, চিত্রটিই বদলে যেতে শুরু করেছে গত কয়েক দিনে।’’
২৭ এপ্রিল নেপালের ভূমিকম্পের পরেও পাহাড় এবং উত্তরবঙ্গে ‘আফটার শক’-এর ভয়ে তঠস্থ পর্যটকেরা পাহাড় তেকে মুখ ফিরিয়েছিলেন। এই সময়ে একটি ভূমিকম্পের উৎসস্থল মিরিক জানার পরেই পাহাড় জুড়ে রীতিমতো আতঙ্ক গ্রাস করে।
দার্জিলিঙের হোটেল মালিকদের হিসেবে অন্তত ৩০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছিল। ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন ‘দার্জিলিং অ্যসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেন, ‘‘ভূমিকম্পের পরেই পর্যটকরা ফিরে যেতে শুরু করেছিলেন। আতঙ্কে আগাম বুকিংও বাতিল হয়ে গিয়েছিল।’’
সেই বুকিং বাতিল করা পর্যটকেরাই ফের ফিরতে চাইছেন পাহাড়ে।
ট্যুর অপারেটরদের একাংশ দাবি করেছেন ভূমিকম্পের জেরে দেশ বিদেশের যে পর্যটকদের নেপালে যাওয়ার কথা ছিল, তাঁদের একাংশ নেপালের পরিবর্তে দার্জিলিংকে বেছে নিয়েছেন। প্রদীপবাবুর কথায়, ‘‘এখন প্রায় সকলেই প্যাকেজ বুকিং করে আসেন। শেষ মুহূর্তে সেই প্যাকেজ বাতিল করা সম্ভব হয় না। এমনও অনেককে দেখেছি, ভূমিকম্পের পরে নেপালের পরিবর্তে দার্জিলিং ঘোরার প্যাকেজ বেছে নিয়েছেন।’’
প্রায় তিন বছর ধরে অশান্তি থিতিয়ে আসায় গত গ্রীষ্মে দার্জিলিঙে পর্যটকদের ঢল নেমেছিল। এ বছরের গোড়াতেও বহু দর্শক ছিলেন পাহাড়ে। ভূমিকম্পের আতঙ্ক সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছিল।
তবে আতঙ্ক সরিয়ে পর্যটকদের ভিড় বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে পাহাড়ে। দার্জিলিঙের একটি হোটেল ম্যানেজার কমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পর্যটকেরা ফিরছেন ঠিকই তবে সংশয় সঙ্গে করে। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের বিবিধ প্রশ্ন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি তাঁদের অভয় দেওয়ার।’’
পথ দুর্ঘটনায় মৃত ২। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই যাত্রীর। আহত আরও ২৫। শনিবার সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জের চাঁদপুর এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে। মৃতেরা হলেন নাকাশিপাড়ার বিক্রমপুরের বাসিন্দা ফুলটুসি খাতুন (১৮) ও কালীগঞ্জের চাঁদপুরের বাসিন্দা মরিয়ম শেখ (৪০)। আহতদের মধ্যে আটজনকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের বেথুয়াডহরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বহরমপুরগামী একটি লরি উল্টোদিক থেকে আসা কৃষ্ণনগরগামী একটি বাসকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। পুলিশ বাস ও লরিটিকে আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২টি গাড়ির চালকই পলাতক।