ফাইল চিত্র।
কলকাতা থেকে বাগডোগরা বিমানের টিকিট কাটা। পঞ্চমীতে। আবার কলকাতা থেকে শিলিগুড়ির ট্রেনের টিকিটও কাটা। শুধু ট্রেন বা বিমান নয়, থাকার জায়গাও আছে।
সন্তোষপুরের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী অরিজিৎ ভৌমিক এক দিকে কালিম্পং ও নেওড়া ভ্যালিতে থাকবেন বলে বুকিং করে রেখেছিলেন, অন্য দিকে সিকিমের রাবাংলা ও বিসতাং-ও বুক করে রেখেছিলেন। অবস্থা বুঝে এখন কালিম্পং ও নেওড়াভ্যালি বাতিল করেছেন।
কিন্তু সবাই অরিজিতবাবুর মতো দূরদর্শী নন। অনেকের রেস্ততেও টান থাকে। কিন্তু বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা ষোলো আনা। পুজোর এই ছুটিতে বঙ্গদেশের পর্যটকদের একটা বড় অংশই এত দিন হিমালয়ের কোলে চলে যেতেন। দার্জিলিং, কালিম্পং তো বটেই। তা ছাড়াও কোলাখাম থেকে তিনচুলে, লামাহাটা থেকে চারকোল-এও ভিড় উপচে পড়ত এই সময়ে।
এ বছরে উলটপুরাণ। দীর্ঘ অপেক্ষাতেও পাহাড়ে জট না খোলায় এখন বুকিং বাতিলের পালা। হেল্প ট্যুরিজম-এর কর্তা অসিত বিশ্বাস জানিয়েছেন, মোটামুটি ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চুপ করে বসেছিলেন পর্যটকদের দল। আশা করেছিলেন খুলে যাবে পাহাড়ের রাস্তা। কিন্তু এখনও বন্ধ নিয়ে দোলাচল থাকায় আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বেশির ভাগ মানুষ। গত চার-পাঁচ দিনে তাই বুকিং বাতিল করার ধুম পড়ে গিয়েছে। শিলিগুড়ির ট্যুর অপারেটার সম্রাট সান্যাল হতাশ গলায় বলেন, ‘‘পাহাড়ের এই অশান্তির কারণে সিকিমে যেতেও ভরসা পাচ্ছেন না অনেকে। তবে একদল এখনও আশা নিয়ে করছেন যে আগামী দিন দশেকের মধ্যে পরিস্থিতি ভাল হবে।’’
ষষ্ঠীর দিন ২১ জনের একটি দলের ট্রেনে শিলিগুড়ি হয়ে যাওয়ার কথা দার্জিলিং ও সিকিম। দলের সদস্য রাজা সেন জানিয়েছেন, এখনও বুক বেঁধে বসে আছেন। সম্রাটবাবুর কথায়, যাঁরা আগে থেকে ট্রেন বা বিমানের টিকিট কেটে রেখেছেন, তাঁদের অনেকেই মুখ ঘুরিয়ে ডুয়ার্স এবং ভুটান চলে যাচ্ছেন। ভুটানে ভিড়টা সবচেয়ে বেশি। ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি জানাচ্ছেন, দার্জিলিং-এর বড় সংখ্যক পর্যটক ভুটানের পুনাখা, ওয়াংদু, ত্রংসা, বুমথাং-এর মতো নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বেড়াতে যাচ্ছেন। মেঘালয়, অসম, অরুণাচলের নতুন গন্তব্যেও ছুটছেন অনেকে।