গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ইডি আক্রান্ত! শাহজাহান গ্রেফতার! মহিলা বিক্ষোভ! স্টিং ভিডিয়ো! এই ধারাবাহিক ঘটনার আবহেই এসেছিল লোকসভা ভোট। সেই সন্দেশখালিতে আজ পা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বছরের শুরু থেকে কয়েক মাস উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি-বিতর্ক কার্যত তাড়া করেছিল রাজ্যের শাসকদলকে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি নিশ্চিত ছিল, শুধু সন্দেশখালিতেই নয়, সারা রাজ্যের লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলবে এই ঘটনাপ্রবাহ। জল উল্টো দিকেই বয়েছে। সন্দেশখালির লোকসভা কেন্দ্র বসিরহাটেও শোচনীয় পরাজয় হয়েছিল বিজোপির। আজ সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশন মাঠে প্রশাসনিক সভা করবেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে মাঠ চত্বর।
সন্দেশখালির ঘটনাপ্রবাহ যেমন ছিল
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির তৎকালীন তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ শাহজাহানের বাড়িতে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে যায় ইডি। কিন্তু শাহজাহানের সরবেড়িয়া আকুঞ্জিপাড়ার বাড়িতে ঢোকার মুখে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন তদন্তকারীরা। ইডি আধিকারিকদের মারধর করে তাঁদের জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কয়েক জন আধিকারিককে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। এই আবহে সন্দেশখালির কয়েক জন মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ করেন শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে। রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয় নয়া বিতর্ক। পরে সেই তর্ক রাজ্য রাজনীতির গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। নারী নির্যাতন, জমি দখল, মাছের ভেড়ির লিজ়ের টাকা না দেওয়ার মতো বিভিন্ন অভিযোগে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি পথে নামে। যদিও প্রথম থেকে নারী নির্যাতনের বিষয়টি সাজানো বলে দাবি করে তৃণমূল। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন শাহজাহান এবং তাঁর কয়েক জন অনুগামী। অন্য দিকে, লোকসভা ভোটের আগেই ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) দেখা গিয়েছিল, সন্দেশখালির গণধর্ষণের অভিযোগ সাজানো এবং সংগঠিত বলে ‘মানছেন’ সেখানকার বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়াল। ঘটনাক্রমে লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্রে জয়ী হয় তৃণমূল। যদিও সন্দেশখালি বিধানসভায় অল্প ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এই আবহে মমতার সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আজ নজর থাকবে সে দিকে। আবার আগামিকাল সন্দেশখালিতে যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি ‘জনসংযোগ যাত্রা’ করবেন।
পার্থদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত ইডির মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র-সহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কলকাতার বিচার ভবনে চলছে ওই প্রক্রিয়া। এর আগে পার্থ ইডির মামলা থেকে নিষ্কৃতি চেয়ে আবেদন করেন। বিধি অনুযায়ী, যাঁরা মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার আর্জি আগে জানাবেন, তাঁদের চার্জ গঠনের শুনানি আগে হবে। সেই মতো পার্থ প্রথমে আবেদন করেন এবং শুনানি শুরু হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত আরও অনেকেই মামলা থেকে নিষ্কৃতি চেয়েছেন। শেষমেশ চার্জ গঠন নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আজ তা জানাতে পারে আদালত। নজর থাকবে ওই সংক্রান্ত খবরের দিকে।
বারাসতের পুকুরে বস্তাবন্দি টুকরো টুকরো দেহের রহস্য
বারাসতের পুকুর থেকে বস্তা ভর্তি টুকরো টুকরো দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রহস্য বাড়ছে। কী ভাবে ওই পুকুরে দেহাংশ এল, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। পুলিশ ইতিমধ্যেই দেহের টুকরোগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এই হত্যা রহস্যের বিষয়ে কিছু নতুন তথ্য মিলতে পারে। রবিবার বারাসত পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার এক পুকুর থেকে তিনটি বস্তা উদ্ধার করে পুলিশ। বস্তাগুলো প্রথমে স্থানীয়েরা দেখতে পান। তিন-চার দিন ধরে ওই পুকুরে বস্তাগুলি ভাসছিল। তবে শনিবার সেই বস্তাগুলো থেকে দুর্গন্ধ বার হতে শুরু করায় টনক নড়ে এলাকাবাসীদের। খবর যায় বারাসত থানায়। রহস্যের কিনারা হবে কি? আজ নজর থাকবে সে দিকে।
মনমোহনের শেষকৃত্যস্থল এবং স্মৃতিসৌধ নিয়ে বিতর্ক
ভারতের প্রথম শিখ (এবং অহিন্দু) প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে অপমান করার অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। রবিবার মোদী মন্ত্রিসভার সদস্য হরদীপ সিংহ পুরী কংগ্রেস আমলে ‘শিখ নিধন দাঙ্গার’ প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন। শিখ ধর্মাবলম্বী হরদীপ কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “যখন আমার সম্প্রদায়ের ৩০০০ জন মানুষকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল, তখন শিখেদের জন্য তাদের (কংগ্রেসের) শ্রদ্ধা কোথায় ছিল?” মনমোহনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ‘অব্যবস্থা’ এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ‘অশ্রদ্ধার’ অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস। শাসকদল বিজেপির পর এ বার মোদী মন্ত্রিসভার সদস্যেরাও কংগ্রেসের অভিযোগ খণ্ডন করে কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন। এই বিতর্কের জল কত দূর গড়ায়, সে দিকে আজ নজর থাকবে।
শীত আবার বাড়বে
অবশেষে আবার পারদপতনের পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। উত্তুরে হাওয়ার দাপটে বছরের শেষে ফের ফিরতে চলেছে চেনা শীতের আমেজ। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ সকালের দিকে গত কয়েক দিনের তুলনায় তাপমাত্রার বিশেষ হেরফের না হলেও, রাত থেকে নামতে পারে তাপমাত্রা। পরের কয়েক দিনে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি পারদপতন হতে পারে। নতুন বছর শুরু হওয়ার পরেও চলবে শীতের ইনিংস। সঙ্গে কুয়াশাও বাড়বে বঙ্গের বেশিরভাগ জেলায়।