গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নবান্ন অভিযান আটকাতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ২৭ অগস্ট, মঙ্গলবার একটি সংগঠনের তরফে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের প্রতিবাদে ওই কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের অভিযোগ, ওই কর্মসূচির জন্য পুলিশের কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। কর্মসূচি বাতিলের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। আজ এই মামলার শুনানি হতে পারে।
১) নবান্ন অভিযান কর্মসূচির প্রেক্ষিতে রাজ্যের মামলার শুনানি কলকাতা হাই কোর্টে
নবান্ন অভিযান নিয়ে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাজ্য। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও কর্মসূচিতে শামিল হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ-সহ আরজি কর-কাণ্ডে একাধিক দাবি নিয়ে অভিযানের আয়োজন চলছে। পুলিশের অনুমতি ছাড়া এই ধরনের কর্মসূচি কী ভাবে করা যেতে পারে, আদালতে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে নবান্ন অভিযানের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, আইন নিজের পথে চলবে। কিন্তু শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে কোনও ভাবেই বাধা দেওয়া যাবে না। যাঁরা প্রতিবাদ করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। এর পরেই কর্মসূচি বন্ধ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। এই শুনানির দিকে আজ নজর থাকবে।
২) আরজি কর-কাণ্ডের ধৃতকে কোর্টে হাজির করাবে সিবিআই
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছিল আদালত। আজ তাঁর সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ফলে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করানো হবে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে এই ঘটনার তদন্তভার আদালত সিবিআইকে দেয় এবং ধৃতকেও তাদের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁকে একাধিক বার আরজি করের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদনও জানানো হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। আজকের মধ্যে সেই আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত খবরের দিকে নজর থাকবে।
৩) রাজ্যের সর্বত্র থানা ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপির ডাকে
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথেই থাকতে চাইছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবন অভিযান থেকেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শুক্রবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আজ রাজ্যের সর্বত্র থানা ঘেরাও করবে বিজেপি। অন্য দিকে, বুধবার থেকে কলকাতার শ্যামবাজারে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে শুরু হওয়া ধর্নাও চলবে। তৃতীয় দিনের ধর্নায় রাজ্য নেতৃত্ব ছাড়াও সাংসদ, বিধায়কদের উপস্থিত থাকার কথা।
৪) মহারাষ্ট্রের বদলাপুরে শিশু নিগ্রহ পরবর্তী পরিস্থিতি
দিন দশেক আগে মহারাষ্ট্রের বদলাপুরের স্কুলে তিন এবং চার বছর বয়সি দুই শিশুকন্যাকে যৌন হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা বেশ কিছু দিন পর প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্ত স্কুলেরই সাফাইকর্মী। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা, শ্রেণিশিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে এবং স্কুলেপড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে।
৫) প্রতিবাদী চিকিৎসকেরা কি সর্বত্র কাজে যোগ দেবেন
আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে সারা দেশে চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ দেশের সমস্ত হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। তার পরেই ১১ দিন পর কর্মবিরতিতে ইতি টেনেছেন এমসের চিকিৎসকেরা। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা কাজে ফিরছেন। এ বার প্রশ্ন উঠছে, দেশের বাকি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও কি কর্মবিরতিতে ইতি টানবেন? আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কী করবেন? বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের কর্মবিরতি চলবে।