কলকাতায় চার রুটেই ট্রাম চালানোর প্রস্তাব পুরসভার। প্রতীকী চিত্র।
শহরের গতি বাড়াতে ও দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমাতে কেবলমাত্র চারটি রুটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হোক ট্রাম পরিষেবা। সম্প্রতি পরিবহণ দফতরকে এমনই পরামর্শ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। শনিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, "কলকাতার ট্রাম আমাদের হেরিটেজ। সেই ঐতিহ্য আমাদের বজায় রাখতে হবে। কিন্তু যে সব জায়গায় ইতিমধ্যে ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেখানে লাইনগুলো তুলে দেওয়া দরকার। এমনকি, ওভারহেডে থাকা ট্রামের তারগুলিও সরিয়ে ফেলা দরকার। অনেক জায়গাতে লাইনের উপর পিচের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া শহরে ট্রাম চললে যানজট বেশি হবে, শহরের গতি অনেকটাই কমে যাবে। তাই ট্রাম যাতে কেবল চারটি মাত্র রুটেই চালানো হয় সেই বিষয়ে আমরা পরিবহণ দফতরকে বলেছি।" তিনি আরও বলেন, "শহরের বেশ কিছু রাস্তা রয়েছে, যেগুলি অপরিসর। সেখানে ট্রাম লাইনের জন্য দুর্ঘটনাও ঘটেছে মাঝেমধ্যে। তাই আমরা পরামর্শ দিয়ে পরিবহণ দফতরকে বলেছি বাকি লাইনগুলো রাখার আর কোনও প্রয়োজন নেই।"
উল্লেখ্য,গতিশীলতার যুগে পিছিয়ে পড়েছে ট্রাম। সময়ের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে একে একে উঠে গিয়েছে কলকাতার ঐতিহ্য ট্রামের বেশ কিছু রুট। এখন কেবল মাত্র কলকাতা শহরে তিনটি রুটেই চলছে ঐতিহ্যবাহী এই দূষণহীন যানটি। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে ট্রাম বাঁচানো নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। চলতি মাসেই পরিবহণ দফতর তাদের অবস্থানের কথা কলকাতা হাইকোর্টকে জানাবে। তার আগে পরিবহণ দফতর এই সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা পুরসভার মতামত জানতে চেয়েছিল। যা ইতিমধ্যে পরিবহণ দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেছেন মেয়র।
বর্তমানে টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়াহাট, এসপ্লানেড থেকে বালিগঞ্জ ও এসপ্লানেড থেকে শ্যামবাজার রুটে ট্রাম চলাচল করছে। আরও একটি রুটে ট্রাম চলাচল পুজোর আগেই শুরু করতে চায় পরিবহণ দফতর। কলকাতার প্রাচীনতম রুট খিদিরপুর ও ধর্মতলার মধ্যে ট্রাম আবারও চালু করা হবে বলে জানিয়েছে পরিবহণ দফতরের একাংশ। এই সংক্রান্ত বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে কবে থেকে এই ট্রাম পরিষেবা চালু হবে, তা জানা যায়নি। শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনেও কলকাতার ট্রাম নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন কাউন্সিলর মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায়। তা নিয়ে কলকাতা পুরসভার অবস্থান কী, পুর অধিবেশনে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ।